ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৭ জুন ২০২৫, ১৩ আষাঢ় ১৪৩২

ভোগান্তির প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে শ্রীবরদীর তিন কিমি কাঁচা রাস্তা

মো. সাফিজল হক তানভীর, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, শেরপুর

প্রকাশিত: ০২:০৮, ২৭ জুন ২০২৫

ভোগান্তির প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে শ্রীবরদীর তিন কিমি কাঁচা রাস্তা

ছবি: জনকণ্ঠ

শ্রীবরদী উপজেলার রানীশিমুল ইউনিয়নের বালিজুরি বাজার থেকে রাঙ্গাজান মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভ পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার সড়ক দীর্ঘদিন ধরে চরম অবহেলায় পড়ে রয়েছে। সড়কটি এখনো কাঁচা থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে, সৃষ্টি হয় কাদা। তখন সাধারণ পথচারীদের চলাচল দুর্বিষহ হয়ে ওঠে; যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বালিজুরি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে রাঙ্গাজান পর্যন্ত সড়কজুড়ে অসংখ্য বড় বড় গর্ত। এসব গর্তে পানি জমে রাস্তাটি কর্দমাক্ত ও পিচ্ছিল হয়ে পড়ে। প্রতিদিন এই সড়কে যাতায়াত করেন স্থানীয় কয়েকটি গ্রামের শিক্ষার্থী, কৃষক, রোগীসহ হাজারো মানুষ। কিন্তু বছরের পর বছর এ দুর্দশার অবসান হয়নি।

স্থানীয় যুবক ইদ্রিস মিয়া বলেন, “এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন আমাদের চলাচল করতে হয়। কিন্তু সামান্য বৃষ্টিতেই সড়ক কাদায় একাকার হয়ে যায়। বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ে। কাদা মাড়িয়ে যেতে গিয়ে তাদের জামা-কাপড় নষ্ট হয়, অনেকে পড়ে গিয়ে আহতও হয়। প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটে। এমনকি জরুরি প্রয়োজনে কোথাও যেতে হলে সময়মতো পৌঁছানোও সম্ভব হয় না। আমরা বারবার দাবি জানিয়েছি রাস্তাটি যেন পাকা করা হয়, কিন্তু এখনো কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা বলেন, “প্রতিটি নির্বাচনের সময় নেতারা রাস্তা পাকা করার আশ্বাস দেন। কিন্তু ভোটের পর সবাই ভুলে যান। আমরা অনেকবার লিখিতভাবে অভিযোগ করেছি, কিন্তু কোনো ফল হয়নি।”

রাঙ্গাজান গ্রামের বাসিন্দা হামিদ মিয়া বলেন, “এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিনই আমাদের চলাচল করতে হয়। কিন্তু কাঁচা ও ভাঙা-চোরা অবস্থার কারণে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। বিশেষ করে কৃষকরা তাঁদের উৎপাদিত ফসল ঠিকভাবে বাজারে নিতে পারছেন না। সময়মতো পণ্য বিক্রি করতে না পেরে অনেকে ক্ষতির মুখে পড়ছেন। অন্যদিকে, রোগী পরিবহন করাও অত্যন্ত কষ্টকর। অ্যাম্বুলেন্স তো দূরের কথা, সিএনজিও এই রাস্তায় চলতে পারে না। অনেক সময় পায়ে হেঁটে রোগী হাসপাতালে নিতে হয়। ফলে দ্রুত রাস্তাটি পাকা করা এখন সময়ের দাবি।”

স্থানীয় মোতালেব হোসেন বলেন, “রোগীদের জন্য এই রাস্তাটা সবচেয়ে কষ্টদায়ক। অন্তঃসত্তা নারী বা গুরুতর অসুস্থদের জন্য এটি জীবনের ঝুঁকি হয়ে দাঁড়ায়। কাঁচা রাস্তার কারণে কৃষকরাও তাঁদের ফসল বাজারে নিতে পারছেন না। এতে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন অনেকে।”

রানীশিমুল ইউনিয়নের সদস্য নুর হক বলেন, “ব্যক্তিগতভাবে কয়েকবার মাটি ফেলে রাস্তা ঠিক করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু এ এলাকার দোয়াশ মাটি টেকসই না। তাই পাকাকরণই একমাত্র সমাধান।”

শ্রীবরদী উপজেলা প্রকৌশলী মশিউর রহমান বলেন, “রাস্তাটির দুরবস্থার বিষয়টি আমরা অবগত আছি। আমরা এর উন্নয়নের ব্যাপারে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।”

শহীদ

×