অফিসের ডেস্কে, স্কুল-কলেজের ক্লাসের ফাঁকে বা মিটিংয়ের সময়, ট্রাফিকের জ্যামে দাঁড়িয়ে একটুখানি বিরতি নিয়ে তাড়াহুড়া করে খাওয়া আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে খাবারের দিকে সঠিক মনোযোগ দেওয়া কিংবা ধীরে খাওয়া প্রায় বিলাসিতার মতোই মনে হয়। পুষ্টিবিদেরা বারবার ধীরে এবং সচেতনভাবে খাওয়ার পরামর্শ দেন, কিন্তু বাস্তবে এটি প্রায় কেউই মেনে চলেন না। কিন্তু, প্রশ্ন তো উঠে আসে, আমরা কেন তাড়াহুড়া করে খাবার খাই? শুধুমাত্র সময় বাঁচানোর জন্য? না কি খাবারের ধরনই এই অভ্যাসের পেছনে কাজ করে?
সম্প্রতি জাপানের ফুজিতা হেল্থ ইউনিভার্সিটির গবেষকরা এ বিষয় নিয়ে একটি গবেষণা পরিচালনা করেছেন। ‘নিউট্রিয়েন্টস্’ জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় ২০ থেকে ৬৫ বছর বয়সী ৪১ জন মানুষের থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে খাবারের ধরন এবং খাওয়ার গতির সম্পর্ক বিশ্লেষণ করা হয়।
গবেষণার ফলাফল
গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের তিনটি দলে ভাগ করা হয় এবং তাদের পিৎজা, হ্যামবার্গার ও ভাতের সঙ্গে সবজি জাতীয় খাবার খেতে দেওয়া হয়। গবেষকরা চিউইং সেন্সর এবং ভিডিও ব্যবহার করে তাদের খাওয়ার সময়, চিবোনোর সংখ্যা এবং গতির পরিমাপ করেন।
ফলাফল ছিল চমকপ্রদ। দেখা গেছে, অংশগ্রহণকারীরা পিৎজ়া দ্রুত খেয়েছেন এবং কম চিবিয়েছেন, বিশেষ করে যাদের ওবেসিটি ছিল। অন্যদিকে, ভাত এবং সবজি খেতে তাদের বেশি সময় লেগেছে। তবে, যেটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো, সব ধরনের খাবারের ক্ষেত্রেই চিবোনোর সংখ্যা সমান ছিল, তবে খাবার খাওয়ার গতি ছিল বিভিন্ন। অধ্যাপক কাতসুমি লিজ়ুকার মতে, ‘‘খাবারের ধরন এবং পরিবেশনের উপর নির্ভর করে খাওয়ার গতি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ফাস্ট ফুডের পরিবর্তে ভাত বা সবজি জাতীয় খাবার বেছে নিলে খাবার খাওয়ার সময় বেশি হয় এবং সমস্যা কমে।’’
তাহলে কী করা উচিত?
কাতসুমি লিজ়ুকার মতে, ‘‘খাবার চিবানোর বিষয়টি নিয়ে না ভাবলেও চলবে, তবে খাবার এমনভাবে বাছাই করা উচিত, যা খেতে বেশি সময় নিবে।’’ কারণ ধীরে ধীরে চিবিয়ে খাওয়ার ফলে খাবার ভালোভাবে হজম হয় এবং সঙ্গত কারণে খাবারের গতি বাড়ে। তাই সঠিক খাবার নির্বাচনই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
রাজু
