ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৭ জুন ২০২৫, ১৩ আষাঢ় ১৪৩২

সিএনএন ও নিউইয়র্ক টাইমসকে ট্রাম্পের হুমকি, গণমাধ্যমের প্রতিবাদ

প্রকাশিত: ০৯:১৮, ২৭ জুন ২০২৫

সিএনএন ও নিউইয়র্ক টাইমসকে ট্রাম্পের হুমকি, গণমাধ্যমের প্রতিবাদ

ছবি: সংগৃহীত

ইরানে সাম্প্রতিক মার্কিন বিমান হামলা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের ঘটনায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবার সিএনএন ও নিউইয়র্ক টাইমসের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। নিজের আইনজীবীর মাধ্যমে এই দুই গণমাধ্যমকে তিনি ‘মিথ্যা ও মানহানিকর’ প্রতিবেদন প্রত্যাহারের নোটিশ পাঠিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাতে সিএনএনের একজন মুখপাত্র নিশ্চিত করেন, তারা ট্রাম্পের অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন। নিউইয়র্ক টাইমস তাদের প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছে, ‘আমরা আমাদের সাধ্যমতো সত্য জানিয়েছি, কোনো প্রতিবেদন প্রত্যাহার করা হবে না, দুঃখপ্রকাশের প্রশ্নও ওঠে না।’

আইনজীবী আলেহান্দ্রো ব্রিটোর স্বাক্ষরিত আইনি চিঠিতে ২৪ জুন সিএনএন ও নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত প্রতিবেদনকে ট্রাম্পের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণকারী ও মিথ্যা দাবি করা হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ইরানি পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলা ‘সম্পূর্ণ ধ্বংসাত্মক’ ছিল না—যা ট্রাম্পের দাবি বরাবরই ছিল বিপরীতমুখী।

ট্রাম্পের প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তাও ওই গোয়েন্দা মূল্যায়নের অস্তিত্ব স্বীকার করেন, তবে দাবি করেন, সেটি ‘কম আস্থার’ ভিত্তিতে তৈরি এবং প্রেসিডেন্টকে হেয় করতেই ফাঁস করা হয়েছে। ট্রাম্প ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন, যারা এসব তথ্য ফাঁস করেছেন, তাদের ‘অবশ্যই বিচারের আওতায়’ আনা উচিত।

এ বিষয়ে সিএনএনের প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়, ‘আমরা আমাদের সাংবাদিক নাতাশা বারট্রান্ড এবং তার সহকর্মীদের শতভাগ পাশে আছি। তাদের রিপোর্ট জনগণের জানার অধিকারকে সামনে রেখেই করা হয়েছে।’

নিউইয়র্ক টাইমস-এর প্রধান আইন উপদেষ্টা ডেভিড ম্যাকক্রও চিঠির জবাবে বলেন, ‘জনগণের ট্যাক্সের অর্থে পরিচালিত ইরান হামলার সফলতা বা ব্যর্থতা সম্পর্কে জানার অধিকার রয়েছে আমেরিকান জনগণের। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নিরপেক্ষ মূল্যায়ন আমাদের গণতান্ত্রিক কাঠামোর অপরিহার্য অংশ।’

তিনি আরও বলেন, ‘যেকোনো গণমাধ্যম যদি সত্য উপেক্ষা করে, সেটি দায়িত্বহীনতা। আর একজন প্রেসিডেন্ট যদি মানহানির মামলার ভয় দেখিয়ে সেই তথ্যকে স্তব্ধ করতে চায়, সেটি আরও ভয়ানক।’

ট্রাম্প তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে গণমাধ্যমকে নিয়মিত আক্রমণ করেছেন এবং বহুবার মামলা করার হুমকি দিলেও বাস্তবে অধিকাংশ সময় তা অনুসরণ করেননি। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তিনি সিবিএস, ওয়াশিংটন পোস্টসহ বেশ কিছু বড় মিডিয়া হাউজের বিরুদ্ধে আইনি চাপ বাড়িয়েছেন—যা যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম সংশোধন (ফার্স্ট অ্যামেন্ডমেন্ট) অধিকার নিয়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ঘটনা শুধু ট্রাম্প বনাম গণমাধ্যম দ্বন্দ্ব নয়, এটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকতার স্বাধীনতা নিয়েও গুরুতর প্রশ্ন তোলে।

 

সূত্র: সিএনএন।

রাকিব

×