ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৭ জুন ২০২৫, ১৩ আষাঢ় ১৪৩২

পাকিস্তানের পরমাণু শক্তি থামাতে ইসরায়েলের যে গোপন ষড়যন্ত্র

প্রকাশিত: ১১:২৬, ২৭ জুন ২০২৫; আপডেট: ১১:৩৯, ২৭ জুন ২০২৫

পাকিস্তানের পরমাণু শক্তি থামাতে ইসরায়েলের যে গোপন ষড়যন্ত্র

ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের পরমাণু বোমার জনক আব্দুল কাদির খান, যিনি পাকিস্তানকে পারমাণবিক শক্তি বানাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন, তাকে থামানোর চেষ্টা করেছিল ইসরায়েল ও তার মিত্ররা। ১৯৭৪ সালে ভারতের পারমাণবিক পরীক্ষার পর প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টো পারমাণবিক বোমা তৈরির ঘোষণা দেন “আমরা ঘাস খাব, তবুও নিজেদের বোমা বানাব।”

ডাচ কোম্পানি ইউরেনকোতে কাজ করার সময় গোপনে সেন্ট্রিফিউজের নকশা নিয়ে পাকিস্তানে ফিরে আসেন খান। রাওয়ালপিন্ডিতে ল্যাব স্থাপন করে গোপনে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করা শুরু হয়। খানের পরিচালিত নেটওয়ার্ক ইউরোপ থেকে যন্ত্রাংশ কিনে আনার জন্য ডামি কোম্পানি ব্যবহার করত।

ইসরায়েল একাধিক হত্যাচেষ্টা ও ভারতকে সাথে নিয়ে পাকিস্তানের পারমাণবিক স্থাপনা বোমা মারার পরিকল্পনা করে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভারত পিছু হটে। পাশাপাশি চীনের সাহায্যে পাকিস্তান পরমাণু সক্ষমতা অর্জন করে। সোভিয়েত-আফগান যুদ্ধে পাকিস্তানকে পাশে পেতে যুক্তরাষ্ট্রও প্রথমে কঠোর অবস্থান নিলেও পরে নরম হয়।

১৯৯৮ সালে ভারতের পরমাণু পরীক্ষার প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও বোমার পরীক্ষা চালিয়ে বিশ্বের সপ্তম পারমাণবিক শক্তি হয়ে ওঠে। এরপর খান পাকিস্তানের জাতীয় নায়ক হিসেবে সমাদৃত হন। কিন্তু তিনি গোপনে ইরান, লিবিয়া, উত্তর কোরিয়াকে পারমাণবিক প্রযুক্তি দিয়ে “পারমাণবিক কালোবাজার” তৈরি করেছিলেন। ২০০৩ সালে গাদ্দাফি তথ্য ফাঁস করলে পুরো নেটওয়ার্ক প্রকাশ্যে আসে।

২০০৪ সালে খান এক টিভি ভাষণে সব দোষ নিজের কাঁধে নেন, পাকিস্তানি সরকার তাকে ক্ষমা করে। তিনি আজও পাকিস্তানে “জাতীয় বীর” হিসেবে পরিচিত, এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বিশ্বাস করতেন মুসলিম বিশ্বের হাতে পারমাণবিক প্রযুক্তি পৌঁছে দেওয়া ভুল নয়।

আঁখি

×