ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৭ জুন ২০২৫, ১৩ আষাঢ় ১৪৩২

ইরানকে আলোচনায় ফেরাতে যুক্তরাষ্ট্রের ৩০ বিলিয়ন ডলারের প্রস্তাব

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫:০৮, ২৭ জুন ২০২৫

ইরানকে আলোচনায় ফেরাতে যুক্তরাষ্ট্রের ৩০ বিলিয়ন ডলারের প্রস্তাব

ছবি: সংগৃহীত

সাম্প্রতিক ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের মাঝেও পর্দার আড়ালে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে কূটনৈতিক কথোপকথন চলছে। সিএনএন সূত্রে জানা গেছে, আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে ৩০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ, নিষেধাজ্ঞা শিথিল এবং ৬ বিলিয়ন ডলার অবরুদ্ধ ইরানি অর্থ ছাড়ের মতো বড় অঙ্গীকার।

ট্রাম্প প্রশাসনের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা এবং মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক মধ্যস্থতাকারী ইরানকে আবারও পরমাণু আলোচনায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। একটি নাজুক অস্ত্রবিরতির পর এই উদ্যোগ নতুন গতি পেয়েছে। এ আলোচনার মূল শর্ত একটাই—ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে হবে।

সিএনএন-এর বরাতে প্রস্তাবিত প্যাকেজে যা অন্তর্ভুক্ত—

যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যকার সম্ভাব্য আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক ও কৌশলগত প্রস্তাব, যা সিএনএন-এর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। প্রস্তাবিত প্যাকেজের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অংশ হলো ইরানের অসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচিতে ২০ থেকে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি। তবে এই বিনিয়োগের লক্ষ্য হবে শুধুমাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদন ও গবেষণামূলক কাজ, কোনোভাবেই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মতো সামরিক উপযোগী কার্যক্রম নয়। এই তহবিল সরবরাহের ক্ষেত্রে উপসাগরীয় যুক্তরাষ্ট্র-ঘনিষ্ঠ দেশগুলোর অংশগ্রহণের কথাও বিবেচনায় রয়েছে।

এর পাশাপাশি, দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে যেসব ইরানি সম্পদ বিদেশি ব্যাংকে জমা অবস্থায় ছিল, সেগুলোর অন্তত ৬ বিলিয়ন ডলার ফেরত দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এই পদক্ষেপ ইরানের অর্থনীতিকে সাময়িকভাবে স্বস্তি দিতে পারে এবং আলোচনার টেবিলে ফিরে আসার জন্য একটি বড় উদ্দীপক হিসেবে কাজ করতে পারে।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকটি হলো, নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার প্রতিশ্রুতি, যা ইরানের বৈদেশিক বাণিজ্য, জ্বালানি রপ্তানি ও ব্যাংকিং ব্যবস্থার ওপর চাপ অনেকাংশে কমাবে। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ও স্থিতিশীলতা ফেরাতে এই শর্তগুলো ইরানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তবে সবকিছুই নির্ভর করছে তেহরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করার সিদ্ধান্তের উপর।

মার্কিন বাংকার-বাস্টার বোমায় ক্ষতিগ্রস্ত ফোর্ডো সাইটকে অসামরিক পারমাণবিক কেন্দ্রে রূপান্তরের প্রস্তাবও রয়েছে আলোচনায়। সম্ভাব্য অর্থায়ন আসতে পারে উপসাগরীয় মিত্র দেশগুলো থেকে, যদিও পরিচালনায় ইরানের অংশগ্রহণ নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে।

মার্কিন এক কর্মকর্তা জানান, "যুক্তরাষ্ট্র আলোচনায় নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত, তবে প্রকল্পের জন্য অর্থায়ন আমরা করব না।" মার্কিন মধ্যপ্রাচ্য বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ বলেন, “ইউএই-এর মডেল অনুসরণেই ইরানের জন্য একটি ‘নন-এনরিচেবল’ পারমাণবিক কর্মসূচি গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য।”

মুমু ২

×