
ছবি: সংগৃহীতগর্ভাবস্থা একটি নারীর জীবনের সবচেয়ে সংবেদনশীল সময়। এ সময়ে মা যেমন নিজের শরীরের জন্য দায়িত্বশীল, তেমনি গর্ভস্থ সন্তানের সুস্থ বিকাশের জন্যও
গর্ভাবস্থা একটি নারীর জীবনের সবচেয়ে সংবেদনশীল সময়। এ সময়ে মা যেমন নিজের শরীরের জন্য দায়িত্বশীল, তেমনি গর্ভস্থ সন্তানের সুস্থ বিকাশের জন্যও খাদ্যাভ্যাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চিকিৎসকদের মতে, গর্ভকালীন ভুল খাবার গ্রহণের কারণে অনেক সময় জন্মগত প্রতিবন্ধিতা, বুদ্ধিবিকাশে ব্যাঘাত, এমনকি জীবনহানির ঝুঁকিও বাড়তে পারে।
বিশেষজ্ঞরা এমন ৩টি খাবারের কথা উল্লেখ করেছেন, যেগুলো গর্ভাবস্থায় খাওয়া একেবারেই এড়িয়ে চলা উচিত।
১.*উচ্চ মারকিউরি যুক্ত মাছ: শিশুতে স্নায়ুবিক প্রতিবন্ধকতার সম্ভাবনা
বিশেষজ্ঞদের মতে, যেমন: কিং ম্যাকেরেল, শার্ক, সোর্ডফিশ ও বড় সাইজের সামুদ্রিক মাছগুলোতে থাকে বিপজ্জনক মাত্রার মারকিউরি (Mercury)। এই উপাদান গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্ক, শ্রবণশক্তি ও স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে বিঘ্ন ঘটায়।
গবেষণায় দেখা গেছে, গর্ভকালীন অতিরিক্ত মারকিউরি গ্রহণের ফলে শিশুর মধ্যে স্মৃতিভ্রংশ, মনোযোগের ঘাটতি ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধকতার আশঙ্কা থাকে।
কফি, এনার্জি ড্রিংক, চা, চকোলেট, এই খাবারগুলোতে থাকে ক্যাফেইন, যা রক্তনালী সংকুচিত করে এবং গর্ভস্থ শিশুর রক্তসঞ্চালন ব্যাহত করে। এতে শিশুর ওজন কমে যাওয়া, মস্তিষ্কে অক্সিজেনের ঘাটতি ও স্নায়ুবিক বিকাশে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) গর্ভবতীদের দিনে ২০০ মিলিগ্রামের বেশি ক্যাফেইন গ্রহণ না করার পরামর্শ দিয়েছে। অতিরিক্ত গ্রহণে অটিজম ও মানসিক প্রতিবন্ধিতার ঝুঁকিও বাড়ে।
৩. কাঁচা বা আধা-সিদ্ধ মাংস ও ডিম: জীবাণুর আক্রমণে শিশুর জিনগত ত্রুটি
কাঁচা ডিম, হাফ-বয়েল মাংস, সুশি, বা রান্না না হওয়া খাবার থেকে সংক্রমিত হয় সালমোনেলা, লিস্টেরিয়া, টক্সোপ্লাজমা—এমন জীবাণু, যা প্ল্যাসেন্টার মাধ্যমে গর্ভস্থ শিশুর শরীরে প্রবেশ করে।
এই জীবাণু সংক্রমণে দেখা দিতে পারে নিউরাল টিউব ডিফেক্ট (Neural Tube Defects), মস্তিষ্কের গঠনগত সমস্যা, খিঁচুনি বা জন্মের পরপরই গুরুতর অসুস্থতা।
চিকিৎসকরা বলছেন, গর্ভাবস্থায় যেকোনো খাবার খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া, খাবার ভালোভাবে রান্না করা, এবং পাস্তুরাইজড ও নিরাপদ উৎসের খাবার গ্রহণ করা আবশ্যক।
গর্ভকালীন যত্ন শুধু নিজের জন্য নয়, ভবিষ্যতের একটি নতুন জীবনের ভিত্তি গড়ে তোলার জন্য।
ছামিয়া