
সজনে পাতা বাংলাদেশের অতি পরিচিত একটি ভেষজ গাছ, যা পুষ্টি বিজ্ঞানী ও স্বাস্থ্য গবেষকরা ‘নিউট্রিশনস সুপার ফুড’ হিসেবে অভিহিত করেন। প্রতি গ্রাম সজনে পাতায় রয়েছে কমলার চেয়ে সাতগুণ বেশি ভিটামিন সি, ডিমের প্রায় দুই গুণ বেশি প্রোটিন, দুধের চেয়ে চার গুণ বেশি ক্যালসিয়াম, গাজরের চেয়ে চারগুণ বেশি ভিটামিন এ এবং কলার চেয়ে তিনগুণ বেশি পটাশিয়াম।
আয়রনের দিক থেকেও সজনে পালং শাকের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি শক্তিশালী। তাই এটি অন্ধত্ব, রক্তস্বল্পতা ও বিভিন্ন ভিটামিন ঘাটতিজনিত রোগের বিরুদ্ধে কার্যকর হাতিয়ার।
শরীরের কোষ থেকে প্রতিদিন যে টক্সিন ও ফ্রি রেডিক্যাল তৈরি হয়, সেগুলো দূর করতে সজনে পাতা এন্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং ক্যানসার কোষ সৃষ্টিতে বাধা দেয়। এছাড়া এতে রয়েছে বেটা-কেরোটিন, কিউরেটিন ও ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড, যা রক্তচাপ ও রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
সজনে পাতায় আট ধরনের অ্যাসেনশিয়াল অ্যামাইনো অ্যাসিড, ভিটামিন ‘এ’, ‘সি’, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, জিংক, আয়রন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে। এই কারণে সজনে পাতাকে অলৌকিক গুণসম্পন্ন একটি পাতা বলা হয়।
আর্থ্রাইটিস নিরাময়ে সজনে পাতা
হাঁটুর ব্যথা ও আর্থ্রাইটিসে সজনে পাতার জুস বা গুঁড়া দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহার উপকারী। অন্তত ছয় মাস নিয়মিত সজনে পাতা খেলে আর্থ্রাইটিসের ব্যথা কমে যায়।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সজনে পাতার ভূমিকা
এন্টি-অক্সিডেন্ট ও আইসোথিয়োকাইনেটস উপাদান রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। প্রতিদিন মাত্র ৫০ গ্রাম সজনে পাতা খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। বিশেষ করে সজনে পাতার চা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আদর্শ।
রক্তস্বল্পতা দূর করে
সজনে পাতা আয়রনের চাহিদা পূরণে কার্যকর। পালং শাকের তুলনায় আয়রন অনেক বেশি এবং পটাশিয়ামেও সমৃদ্ধ।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
সজনে পাতা মানবদেহের হরমোন বৃদ্ধি করে এবং মায়েদের দুধ বাড়াতে সহায়তা করে। এছাড়া ডায়রিয়া, কলেরা ও আমাশয়সহ বিভিন্ন রোগে উপকারী।
হাইপ্রেসার নিয়ন্ত্রণে সজনে পাতা
সজনে পাতায় সোডিয়াম ক্লোরাইডের পরিমাণ খুব কম থাকায় এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
ত্বকের জন্য উপকারি
সজনে তেল ও গুঁড়া ত্বকের বলিরেখা কমায়, ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং বার্ধক্য রোধে সাহায্য করে।
কিডনি সুস্থ রাখে
সজনে পাতার রস কিডনি ও মূত্রাশয়ের পাথর হওয়া কমায় এবং শরীর থেকে টক্সিন বের করতে সাহায্য করে।
নিয়মিত সজনে পাতা বা এর রস গ্রহণে শরীর হবে শক্তিশালী, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং বিভিন্ন জটিল রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
মিমিয়া