ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৬ জুন ২০২৫, ১৩ আষাঢ় ১৪৩২

১৩ বছর আগে জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদের ওপর পুলিশের লাঠিপেটার ভিডিও ভাইরাল, গোপনে থানা ছাড়লেন ওসি

প্রকাশিত: ২২:৫০, ২৫ জুন ২০২৫; আপডেট: ২২:৫১, ২৫ জুন ২০২৫

১৩ বছর আগে জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদের ওপর পুলিশের লাঠিপেটার ভিডিও ভাইরাল, গোপনে থানা ছাড়লেন ওসি

ছবিঃ সংগৃহীত

জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীদের লাঠিচার্জের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল থানার নবাগত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসমত আলী গোপনে থানা ছেড়ে চলে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

আজ বুধবার (২৫ জুন) সকালে তিনি চলে যান। এর আগে গত ১৩ জুন তিনি জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল থানার ওসি হিসেবে এখানে যোগদান করেছিলেন। তবে পুলিশ সুপার (এসপি) মুহাম্মদ আবদুল ওয়াহাব বলেছেন, ক্ষেতলালের ওসি হাসমত আলীকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৪ জুন) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, জয়পুরহাট শহরে তৎকালীন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক নজরুল ইসলামসহ জামায়াত-শিবির কর্মীদের মিছিলে থানার এসআই হাসমত আলী লাঠিচার্জ করছেন।

লাঠিচার্জে সেই সময়কার জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বেধড়ক লাঠিচার্জে গুরুতর আহত হন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিও ২০১২ সালের ৫ নভেম্বরের। ওই দিন আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর মুক্তির দাবিতে জয়পুরহাট শহরে জেলা জামায়াতে ইসলামীর আয়োজনে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়।

একপর্যায়ে পুলিশ মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ শুরু করে। জয়পুরহাট সদর থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাশমত আলীর লাঠিচার্জে তৎকালীন জামায়াতে ইসলামীর জয়পুরহাট জেলা শাখার সেক্রেটারি অধ্যাপক নজরুল ইসলামসহ দলীয় নেতাকর্মীরা গুরুতর আহত হন। ওই দিনই গুলিতে শিবিরের সাথী বদিউজ্জামান মারা যান।

ওই ঘটনার ১৩ বছর পর চলতি মাসের ১৩ জুন হাশমত আলী ক্ষেতলাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে যোগদান করেন। গতকাল মঙ্গলবার রাতে ১৩ বছর আগের জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদের বেধড়ক লাঠিপেটার সেই ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এরপর আজ বুধবার সকালে ওসি হাসমত আলী গোপনে থানা ছেড়ে চলে যান।

জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা গোলাম কিবরিয়া মণ্ডল বলেন, ২০১২ সালে এসআই হাশমত আলী জয়পুরহাটে এসআই পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি সেই সময় আমাদের দলের জেলা শাখার সেক্রেটারি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম স্যারসহ দলীয় নেতা-কর্মীদের বেধড়ক লাঠিপেটা করেছিলেন। সেই দিন গুলিতে আমাদের ভাই বদিউজ্জামান শাহাদত বরণ করেছিলেন।

দীর্ঘদিন পর হাশমত আলী পদোন্নতি পেয়ে ওসি হিসেবে ক্ষেতলালে যোগদান করেন। আমরা তাঁর সেই দিনের আচরণের কথা কোনো দিন ভুলব না। আমরা জেনেছি, আমাদের দলীয় নেতা-কর্মীদের ওপর সেই লাঠিপেটার ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর ওসি হাশমত আলী থানা থেকে চলে গেছেন।

আজ বুধবার রাত ৯টায় ক্ষেতলাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) হাশমত আলীর সরকারি মুঠোফোনে কল করা হলে সেটি পরিদর্শক (তদন্ত) এস.এম. কামাল রিসিভ করেন। তিনি বলেন, ওসি সাহেব আজ সকালে আমাকে সরকারি ফোনসহ চার্জ বুঝিয়ে দিয়ে পুলিশ লাইনসে যাওয়ার কথা বলেছেন। তিনি সম্ভবত এসপি স্যারের কাছে গিয়ে ছুটি নিয়ে বাড়িতে গেছেন।

ইমরান

×