ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৫ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২

৪৭ লাখ মৃত্যু, ৮ ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয়—মার্কিন যুদ্ধের ভয়াল চিত্র

প্রকাশিত: ১৪:১১, ২৫ জুন ২০২৫; আপডেট: ১৪:২৩, ২৫ জুন ২০২৫

৪৭ লাখ মৃত্যু, ৮ ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয়—মার্কিন যুদ্ধের ভয়াল চিত্র

গত দুই দশকেরও বেশি সময়জুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধগুলোতে সরাসরি নিহত হয়েছেন আনুমানিক ৯ লাখ ৪০ হাজার মানুষ। আর এসব যুদ্ধে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৫.৮ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার।

মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘদিনের সামরিক উপস্থিতির পর, চলতি সপ্তাহেই ইরানের অন্তত তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন বিমান হামলার মধ্য দিয়ে আবারও এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ বিস্তৃত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান কেইনের বরাত দিয়ে জানানো হয়, ২.১ বিলিয়ন ডলার মূল্যের সাতটি বি-২ স্টিলথ বোমারু বিমান ফোর্ডো ও নাতাঞ্জে অন্তত ১৪টি বাঙ্কার-বাস্টার বোমা ফেলেছে, যার প্রতিটি বোমার দাম মিলিয়ন ডলারের বেশি। এই অভিযানে অংশ নেয় মোট ১২৫টিরও বেশি মার্কিন যুদ্ধবিমান, যার মধ্যে ছিল বোমারু, ফাইটার জেট, ট্যাংকার, নজরদারি বিমান এবং সহায়ক বাহিনী। এসব মোতায়েন ও পরিচালনায় খরচ হয় শত শত মিলিয়ন ডলার।

বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সামরিক বাজেট যুক্তরাষ্ট্রের—চীন ও রাশিয়াসহ পরবর্তী নয়টি দেশের সম্মিলিত খরচের চেয়েও বেশি। ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক খাতে বরাদ্দ ছিল ৯৯৭ বিলিয়ন ডলার, যা বৈশ্বিক সামরিক ব্যয়ের ৩৭ শতাংশ, জানিয়েছে স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (SIPRI)।

মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘদিনের সামরিক উপস্থিতির পর, চলতি সপ্তাহেই ইরানের অন্তত তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন বিমান হামলার মধ্য দিয়ে আবারও এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ বিস্তৃত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান কেইনের বরাত দিয়ে জানানো হয়, ২.১ বিলিয়ন ডলার মূল্যের সাতটি বি-২ স্টিলথ বোমারু বিমান ফোর্ডো ও নাতাঞ্জে অন্তত ১৪টি বাঙ্কার-বাস্টার বোমা ফেলেছে, যার প্রতিটি বোমার দাম মিলিয়ন ডলারের বেশি। এই অভিযানে অংশ নেয় মোট ১২৫টিরও বেশি মার্কিন যুদ্ধবিমান, যার মধ্যে ছিল বোমারু, ফাইটার জেট, ট্যাংকার, নজরদারি বিমান এবং সহায়ক বাহিনী। এসব মোতায়েন ও পরিচালনায় খরচ হয় শত শত মিলিয়ন ডলার।

বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সামরিক বাজেট যুক্তরাষ্ট্রের—চীন ও রাশিয়াসহ পরবর্তী নয়টি দেশের সম্মিলিত খরচের চেয়েও বেশি। ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক খাতে বরাদ্দ ছিল ৯৯৭ বিলিয়ন ডলার, যা বৈশ্বিক সামরিক ব্যয়ের ৩৭ শতাংশ, জানিয়েছে স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (SIPRI)।

আফগানিস্তান ও ইরাক যুদ্ধে অর্ধকোটিরও বেশি প্রাণহানি

২০০১ সালের ৭ অক্টোবর আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ শুরু হয়, ৯/১১ হামলার প্রতিক্রিয়ায়। লক্ষ্য ছিল আল-কায়েদাকে ধ্বংস করা ও তালেবানকে ক্ষমতা থেকে সরানো। তার কম দুই বছর পর, ২০০৩ সালের ২০ মার্চ যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা ইরাকে যুদ্ধ শুরু করে, অভিযোগ ছিল—সাদ্দাম হোসেনের হাতে গণবিধ্বংসী অস্ত্র রয়েছে। যদিও কখনও এসব অস্ত্রের অস্তিত্ব মেলেনি।

আফগানিস্তানে এবং পাকিস্তান সীমান্তবর্তী এলাকায় ২০ বছরব্যাপী যুদ্ধে প্রাণ গেছে প্রায় ২ লক্ষ ৪৩ হাজার মানুষের। আর ইরাকে প্রাণ হারিয়েছেন আনুমানিক ৩ লক্ষ ১৫ হাজার। মোট মিলে ২০০১ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে সরাসরি নিহতের সংখ্যা অন্তত ৫ লক্ষ ৫৮ হাজার।

মার্কিন যুদ্ধের অর্থনৈতিক ব্যয়

যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধ খরচ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫.৮ ট্রিলিয়ন ডলারে। এর মধ্যে:

  • প্রতিরক্ষা দপ্তরের খরচ: $২.১ ট্রিলিয়ন

  • হোমল্যান্ড সিকিউরিটি খাতে: $১.১ ট্রিলিয়ন

  • প্রতিরক্ষা বাজেট বৃদ্ধিতে: $৮৮৪ বিলিয়ন

  • সাবেক সেনা সদস্যদের চিকিৎসায়: $৪৬৫ বিলিয়ন

  • সুদের খাতে: $১ ট্রিলিয়ন (যুদ্ধের জন্য নেওয়া ঋণের উপর)

এছাড়া, আগত ৩০ বছরে যুদ্ধাহত ও সাবেক সেনাদের জন্য আরও $২.২ ট্রিলিয়ন ব্যয় হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে যুদ্ধ-পরবর্তী ব্যয়সহ মোট খরচ দাঁড়াবে প্রায় $৮ ট্রিলিয়ন।

গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যায় যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়ন

যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বিদেশি সহায়তা প্রাপক ইসরায়েল। ১৯৫৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত দেশটি পেয়েছে অন্তত $২৫১.২ বিলিয়ন (মূল্যস্ফীতিসম্পন্ন)। ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের মধ্যে স্বাক্ষরিত ১০ বছরের সমঝোতা অনুযায়ী, ২০২৮ সাল পর্যন্ত ইসরায়েলকে প্রতি বছর $৩.৮ বিলিয়ন সামরিক সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

কিন্তু ২০২৩ সালের অক্টোবর হামলার পর এক বছরে যুক্তরাষ্ট্র অতিরিক্ত $১৭.৯ বিলিয়ন সামরিক সহায়তা দিয়েছে, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ বার্ষিক সহায়তা। এর মধ্যে ছিল:

  • $৬.৮ বিলিয়ন সামরিক সহায়তা

  • $৪.৫ বিলিয়ন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা খাতে

  • $৪.৪ বিলিয়ন মার্কিন অস্ত্রভাণ্ডার থেকে ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহে

দুই দশকের বেশি সময়জুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে চালানো যুদ্ধগুলো শুধু কোটি কোটি ডলারই নয়, কেড়ে নিয়েছে লাখ লাখ মানুষের প্রাণ। সেই সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যে জিইয়ে রেখেছে দীর্ঘস্থায়ী অস্থিরতা, মানবিক সংকট এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ওপর অপূরণীয় প্রভাব।

সানজানা

×