ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৫ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২

১০ টি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরী করবে ইরান!

প্রকাশিত: ১৭:২১, ২৫ জুন ২০২৫

১০ টি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরী করবে ইরান!

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের যৌথ বিমান হামলার ঠিক আগে ইরান তাদের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনা, নাতানজ, ইসফাহান ও ফোরদো থেকে প্রায় ৪০০ কেজি ওজনের উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম গোপন স্থানে সরিয়ে নিয়েছিল। এই পরিমাণ ইউরেনিয়াম দিয়ে প্রায় ১০টি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করা সম্ভব, এমনটাই জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা।

 

 

যুক্তরাষ্ট্র গত শনিবার এসব স্থাপনায় ‘বাঙ্কার বিধ্বংসী’ বোমা হামলা চালায়। হামলার মূল লক্ষ্য ছিল ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ও মজুদের কেন্দ্রস্থল হিসেবে পরিচিত এসব স্থাপনা। যদিও হামলায় স্থাপনাগুলো আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কিন্তু ইরান পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ইউরেনিয়াম আগেই সরিয়ে নেয়, এ তথ্য এখন গোয়েন্দা ও স্যাটেলাইট চিত্রের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

হামলার ঠিক আগেই স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা যায়, ফোরদো স্থাপনার বাইরে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে ১৬টি ট্রাক। পাহাড়ের নিচে নির্মিত এই স্থাপনাটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে সুরক্ষিত বলে ধারণা করা হয়। পরে হামলার পরবর্তী স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা যায়—বোমার আঘাতে স্থাপনাটি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বাইরে দেখা যাওয়া ট্রাকগুলোর আর কোনো চিহ্ন নেই।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ট্রাকগুলো দিয়েই হয়তো ৪০০ কেজি ইউরেনিয়াম অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে সেগুলো কোথায় নেওয়া হয়েছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলি কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, ইরানের প্রাচীন রাজধানী ইসফাহানের কাছে একটি ভূগর্ভস্থ গুদামে সেগুলো স্থানান্তর করা হয়ে থাকতে পারে।

 

মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেন,

“এই পরিমাণ ইউরেনিয়াম দিয়ে ১০টি পারমাণবিক বোমা তৈরি করা সম্ভব। তবে এটি কোথায় আছে, তা আমরা নিশ্চিত নই।”এক সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন,“আমার বিশ্বাস, এই ইউরেনিয়াম কখনো ফোরদো থেকে সরানো হয়নি এবং তা এখন হয়তো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে।”

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্যমতে, ইরানের এই ইউরেনিয়াম ৬০ শতাংশ পর্যন্ত সমৃদ্ধ ছিল। পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য ইউরেনিয়ামকে অন্তত ৯০ শতাংশ পর্যন্ত সমৃদ্ধ করতে হয়। যদিও এটাই উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, কেননা এই পরিমাণ ইউরেনিয়াম ভবিষ্যতে সামরিক কাজে ব্যবহৃত হতে পারে।

ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র দাবি করছে, এই হামলার মাধ্যমে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে পেছনে ঠেলে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। তবে ইউরেনিয়াম সরানোর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসায় সেই সাফল্যের প্রশ্ন তুলছে আন্তর্জাতিক মহল।

বিশ্লেষকদের মতে, হামলার সময় ও এর আগে ইউরেনিয়াম সরিয়ে নেওয়ার কৌশল ইরানের পূর্বপ্রস্তুতিরই একটি দৃষ্টান্ত। এটা শুধু সামরিক নয়, কূটনৈতিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে একধরনের বিভ্রান্তির মুখে ফেলেছে।

 

 

ইরানের পারমাণবিক প্রকল্পে যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল যৌথ হামলা বড় আকারে ক্ষতি করতে পারেনি বলেই ধারণা করা হচ্ছে। বরং পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে ৪০০ কেজি ইউরেনিয়াম সরিয়ে নেওয়ার ঘটনা গোটা পরিস্থিতিকে আরও জটিল ও উদ্বেগজনক করে তুলেছে।!

ছামিয়া

×