
ছবিঃ সংগৃহীত
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) দলের মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম তার ব্যক্তিগত ফেসবুক স্ট্যাটাসে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে মত প্রকাশ করেছেন।
তিনি লিখেছেন, সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন— প্রধানমন্ত্রীর ১০ বছরের মেয়াদে বিএনপি একমত। তবে এনসিসির (National Constitutional Council) মতো একটি কমিটি করে যদি নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা খর্ব করা হয়, তাহলে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নির্ধারণ নিয়ে একমত হওয়া সম্ভব নয়। অর্থাৎ, বিএনপির এই অবস্থান শর্তসাপেক্ষ।
সারজিস আলম ব্যাখ্যা করে লিখেছেন, এনসিসি হচ্ছে এমন একটি কাউন্সিল যা রাষ্ট্রের সাংবিধানিক পদগুলোতে (যেমন: নির্বাচন কমিশন, পিএসসি, দুদক ইত্যাদি) নিয়োগের জন্য কাজ করবে। এই কাউন্সিল গঠিত হবে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার, রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি সহ কয়েকজন সদস্যকে নিয়ে।
তার মতে, এমন একটি কাউন্সিল রাষ্ট্রকে একটি দলের কাছে জিম্মি হওয়া থেকে রক্ষা করতে পারে। বিরোধীদলের মতামতের সুযোগ সৃষ্টি হবে, সিদ্ধান্তে ভারসাম্য আসবে এবং দলীয় আনুগত্য প্রদর্শনকারী ব্যক্তির চেয়ে যোগ্যদের নিয়োগের সুযোগ তৈরি হবে। এতে নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করে নির্বাচন ডাকাতি, দুদককে ব্যবহার করে অর্থ লুটপাট কিংবা পিএসসি-কে দলীয় নিয়োগের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের প্রবণতা কমবে।
তিনি লেখেন, “আমরা যদি বাংলাদেশের সিস্টেমগুলোর প্রকৃত সংস্কারের কথা বলি, তাহলে সবক্ষেত্রে না হোক, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগ অবশ্যই এনসিসি কিংবা এর মতো কোনো কাঠামোর মাধ্যমে হওয়া উচিত।”
সারজিস আলম আরো বলেন, যদি বিএনপি শর্ত দেয়— ‘হয় প্রধানমন্ত্রীর সর্বোচ্চ ১০ বছর মেয়াদ, অথবা এনসিসি’— তাহলে এতে দেশের স্বার্থের চেয়ে দলের স্বার্থকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে মনে হয়। তার ভাষায়, “বিএনপি হয়তো মনে করছে তারা অবধারিতভাবে ক্ষমতায় আসছে, তাই তারা নির্বাহী ক্ষমতা হ্রাস করার চেষ্টা করছে। কিন্তু তাদের উচিত নিজেদের ক্ষমতার জায়গা থেকে নয়, নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে দেশের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়া।”
তিনি আরও বলেন, “একটি দল তো সব সময় ক্ষমতায় থাকবে না। এমনকি বিরোধীদলে থেকেও এ বিষয়ে চিন্তা করা উচিত।”
সবশেষে সারজিস আলম মন্তব্য করেন, “যদি এনসিসি ও প্রধানমন্ত্রীর ১০ বছর মেয়াদকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে একটি বেছে নিতে হয়, তাহলে আমি নির্দ্বিধায় দেশের স্বার্থে এনসিসিকে বেছে নেব। মৌলিক সংস্কারের প্রশ্নে দেশের স্বার্থে বিন্দুমাত্র আপোষ চলবে না।”
মারিয়া