
ছবি: সংগৃহীত
ধূমপান ও তামাকসেবন বরাবরই ফুসফুস ক্যান্সারের প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচিত হয়ে এসেছে। তবে সাম্প্রতিক গবেষণাগুলো বলছে, বায়ুদূষণ এবং পরিবেশে দীর্ঘ সময় ধরে থাকা ক্ষতিকর কণার সংস্পর্শও এই মারণরোগের ঝুঁকি বহুগুণে বাড়িয়ে দিচ্ছে।
ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মুম্বাইয়ের এইচসিজি ক্যান্সার সেন্টারের মেডিকেল অনকোলজি বিভাগের পরিচালক ডা. ইন্দু অম্বুলকার বলেন, ‘ফুসফুস ক্যান্সারের মৃত্যুর প্রায় ২৯ শতাংশই শুধুমাত্র বায়ুদূষণের কারণে হয়ে থাকে। বাড়ির ভিতরের বায়ুদূষণ কিছুটা কমলেও বাইরের দূষণ উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে।’
প্রতিদিনের অফিস যাত্রাই কি বাড়িয়ে দিচ্ছে ঝুঁকি?
ডা. অম্বুলকার বলেন, ‘এই প্রশ্নের উত্তর হল—হ্যাঁ। বিশেষ করে যদি কেউ যানজটে ঘেরা এলাকায় দীর্ঘ সময় ধরে যাতায়াত করেন, যেখানে ডিজেল নির্গমন, PM2.5 ধূলিকণা, নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইডের মতো দূষণকারী উপাদান ব্যাপক পরিমাণে থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, এসবই ক্যান্সার সৃষ্টিকারী। এই ক্ষুদ্র কণাগুলো শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুসে ঢুকে কোষের জিনে পরিবর্তন ঘটাতে পারে, যা ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।’
শহরের দূষণ এখন বড় জনস্বাস্থ্য সমস্যা
অধূমপায়ীদের মধ্যেও ফুসফুস ক্যান্সারের হার যেভাবে বাড়ছে, তাতে চিন্তিত চিকিৎসকেরা। বিশেষ করে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানে, যেখানে বড় শহরগুলোর বায়ু গুণমান বরাবরই নিরাপদ মাত্রার নিচে থাকে, সেখানে প্রতিদিনের কর্মজীবী মানুষ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন। অফিসগামী মানুষ, হোক তারা গাড়ি বা মোটরসাইকেলে কিংবা গণপরিবহনে—নিয়মিত যানজটের সময় দূষণ শোষণ করছেন ফুসফুসে।
কীভাবে রক্ষা করবেন ফুসফুসকে?
যেহেতু যাতায়াত পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব নয়, তাই কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলেই ঝুঁকি অনেকটা কমানো সম্ভব। চিকিৎসক ডা. অম্বুলকার যেসব পরামর্শ দিয়েছেন—
- যাতায়াতের সময় ভালো মানের দূষণপ্রতিরোধী মাস্ক ব্যবহার করা
- ব্যক্তিগত গাড়ির এয়ার ফিল্টার পরিষ্কার ও কার্যকর রাখা
- সম্ভব হলে কম যানজটপূর্ণ পথ বা সময় বেছে নেওয়া
- পরিচ্ছন্ন ও পরিবেশবান্ধব গণপরিবহন ব্যবহারে অভ্যস্ত হওয়া
- ঘরের ভেতর বায়ুর গুণমান বজায় রাখতে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার
- উচ্চ ঝুঁকির ব্যক্তিদের নিয়মিত ফুসফুসের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো
নোট: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য প্রকাশিত। কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা বা চিকিৎসা-সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের জন্য অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস।
রাকিব