বিএসএফের পুশ-ইন, মাটিরাঙ্গা ও পানছড়িতে ১৫ বাংলাদেশি আটক

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা ও পানছড়ি সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) পুশ-ইন করেছে ১৫ জন বাংলাদেশি নাগরিককে। এর মধ্যে মাটিরাঙ্গায় ৯ জন এবং পানছড়িতে ৬ জনকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

সূত্র জানায়, বৃহষ্পতিবার (২৬ জুন) ভোর আনুমানিক ৫টার দিকে ভারতের ১১৪ ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ হরি বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা মাটিরাঙ্গা উপজেলার শান্তিপুর সীমান্ত দিয়ে ৯ জনকে বাংলাদেশে পুশ-ইন করে। পুশ-ইনকৃতদের আটক করে শান্তিপুর বিওপির বিজিবি সদস্যরা।

আটককৃতদের মধ্যে রয়েছেন ২ জন পুরুষ ও ৭ জন নারী। বর্তমানে তারা বেলছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে বিজিবির হেফাজতে রয়েছেন এবং সেখানে স্থানীয়রা তাদের দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করেছে।

মাটিরাঙ্গায় আটককৃতদের পরিচয় জানা গেছে-মো. মন্নু শরীফ (৪৩), মো. সোহাগ (৩৪), মোছা. পারভীন (৪৭), মোছা. আরভী (২৬), মোছা. উর্মি (১৮), মোছা. ছনিয়া (২৫), মোছা. আকিজা (৫৫), মোছা. হাজেরা খাতুন (৪৫) ও শান্তা বেগম (২৮)। এদের সবার বাড়ি দেশের নড়াইল, যশোর, চাপাইনবাবগঞ্জ, পটুয়াখালী এবং নারায়ণগঞ্জ জেলায়।

এ বিষয়ে মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনজুর আলম বলেন, ‘গভীর রাতে ৯ জনকে পুশ-ইন করা হয়েছে। তাদের মধ্যে নারী ও পুরুষ রয়েছেন। কীভাবে পুশইন করা হয়েছে সেটি এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তারা ভারতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। বর্তমানে তারা বিজিবির তত্ত্বাবধানে রয়েছেন এবং বেলছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে তাদের রাখা হয়েছে। পরিচয় যাচাই-বাছাই শেষে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

একই দিনে পানছড়ি সীমান্ত দিয়েও আরও ৬ জন বাংলাদেশিকে পুশ-ইন করা হয়েছে। পানছড়ি উপজেলার কচুছড়ি সীমান্ত এলাকা দিয়ে বিএসএফ সদস্যরা পুশ-ইন করলে বিজিবির সদস্যরা তাদের আটক করেন। আটককৃতরা জানান, ভারতের ওয়াইনথং এলাকা থেকে হেঁটে হেঁটে প্রায় আড়াই থেকে তিন ঘণ্টায় তারা কচুছড়ি পৌঁছান।

পানছড়িতে আটক হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন মো. শুকুর শেখ (৪২), জাহানারা খাতুন (৩০), মুক্তা বেগম (৩২), ঝরনা খাতুন (৪৫), অলকা বিশ্বাস (২৭) ও শিউলি বেগম (৪২)। এদের বাড়ি খুলনা ও নড়াইল জেলার বিভিন্ন এলাকায়।

পানছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারহানা নাসরিন দৈনিক জনকণ্ঠকে বলেন, ‘৬ জন ব্যক্তিকে পুশ-ইন করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৫ জন নারী ও ১ জন পুরুষ রয়েছে। কীভাবে তাদের পুশইন করা হয়েছে সেটি এখনও পরিষ্কার নয়। বর্তমানে তারা বিজিবির হেফাজতে রয়েছে।’

স্থানীয় প্রশাসন ও বিজিবি সূত্র জানায়, আটককৃতদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর আইনি প্রক্রিয়া অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে আসা এসব মানুষদের ভাগ্যে এখন কী অপেক্ষা করছে তা নির্ভর করছে প্রশাসনের সিদ্ধান্তের ওপর। তবে সীমান্তে এ ধরনের ঘটনা দুই দেশের মধ্যে উত্তাপ ছড়ানোর পাশাপাশি মানবিক সংকটের নতুন প্রশ্নও তুলছে।