
ছবি: দৈনিক জনকণ্ঠ।
গাজায় চলমান নৃশংসতা ও মানবতার বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে এক অভিনব এবং শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ শুরু করেছে বাংলাদেশের মানবিক সংগঠন মোরাল প্যারেন্টিং পরিবার।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় শোক বই তৈরির লক্ষ্যে সারাদেশব্যাপী সাধারণ মানুষের হাতে লেখা আবেগ, অনুভূতি ও প্রতিবাদের ভাষা সংগ্রহ করছে সংগঠনটি। এরই অংশ হিসেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) শুরু হয়েছে “শোক বই লেখা” কর্মসূচি।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে এই কার্যক্রমের সূচনা হয়। সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই লেখা সংগ্রহ কর্মসূচি এক সপ্তাহব্যাপী চলবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। এরপর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সংগ্রহীত লেখাগুলো একত্রিত করে একটি বৃহৎ শোক বই হিসেবে সংকলন করা হবে। যা নিবেদিত থাকবে ফিলিস্তিনের নির্যাতিত জনগণের প্রতি।
সরেজমিনে দেখা যায়, শতাধিক শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিচ্ছেন এই মানবিক উদ্যোগে। অংশগ্রহণকারীরা তাঁদের নাম, ঠিকানা ও স্বাক্ষরসহ হাতে লেখা শোকবার্তা জমা দিচ্ছেন, যা ভবিষ্যতে একটি শক্তিশালী মানবিক দলিল হিসেবে সংরক্ষিত হবে।
সংগঠন সূত্রে জানা যায়, বইটি পরবর্তীতে দেশের খ্যাতনামা বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, সেলিব্রেটি ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মীদের মূল্যবান মন্তব্যে সমৃদ্ধ করে ঢাকার একটি জাতীয় পাবলিক লাইব্রেরিতে স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করা হবে। যেন আগামী প্রজন্ম জানতে পারে— “আমরা নীরব থাকিনি।”
এই কর্মসূচি প্রসঙ্গে মোরাল প্যারেন্টিং পরিবারের জবি প্রতিনিধি ফজলে রাব্বি বলে,“গাজায় যা ঘটছে, তা কোনো ধর্ম বা ভূখণ্ডের বিষয় নয়—এটি মানবতার বিরুদ্ধে সংঘটিত ভয়াবহ অপরাধ। আমরা তরুণ প্রজন্ম চাই শান্তি, ন্যায়বিচার এবং মানবিকতা। তাই আমরা হিংসা বা সংঘর্ষে নয়, শান্তিপূর্ণ ভাষায় আমাদের প্রতিবাদ জানাতে চাই। এই শোক বই শুধু একটি দলিল নয়, এটি হবে ন্যায়বিচারের দাবিতে লেখা একটি মানবিক ইতিহাস।”
প্রসঙ্গত, মোরাল প্যারেন্টিং পরিবার দীর্ঘদিন ধরে দেশের দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে বৃত্তি, নৈতিক শিক্ষাদান ও মানবিক নেতৃত্ব বিকাশে কাজ করে আসছে। এই শোক বই উদ্যোগ তাদের অন্যতম বৃহৎ মানবিক প্রয়াস হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে।
মিরাজ খান