
ছবি:সংগৃহীত
বর্তমান যুগে স্বাস্থ্যকর খাবার নির্বাচন করতে গিয়ে অ্যাভোকাডো অনেকের তালিকায় থাকে শীর্ষে। তবে উচ্চমূল্যের কারণে অনেকেই এই ফলকে নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখতে হিমশিম খান। এমন অবস্থায় একটি নতুন বিকল্প ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে—সেটি হলো মিষ্টি আলু, যা শুধুমাত্র সহজলভ্য ও কম দামীই নয়, বরং পুষ্টিগুণেও কম নয় একটুও।
অ্যাভোকাডোর বিকল্প হয়ে উঠছে মিষ্টি আলু
সম্প্রতি নাভারা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় জানা গেছে, মিষ্টি আলু বা ইয়াম অনেক পুষ্টিকর উপাদানে ভরপুর। প্রতি ১০০ গ্রামে এতে থাকে প্রায় ৫৪২ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম, যা আমাদের দেহে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও পেশির কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনায় সহায়ক।
তাছাড়া, এতে চর্বির পরিমাণ প্রায় নেই বললেই চলে। গবেষণায় বলা হয়েছে, অ্যাভোকাডোর তুলনায় মিষ্টি আলুতে ১৫ গুণ কম চর্বি থাকে। যদিও অ্যাভোকাডোর চর্বি স্বাস্থ্যকর, কিন্তু যাদের ডায়েট পরিকল্পনায় চর্বি নিয়ন্ত্রণ জরুরি, তাদের জন্য মিষ্টি আলু হতে পারে এক আদর্শ খাদ্য।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও হজমে সহায়ক
মিষ্টি আলুতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরকে বিভিন্ন রোগের হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। নিয়মিত খেলে এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করতে পারে।
এছাড়া, এটি হজমে সহায়ক এবং এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ (বিটা-ক্যারোটিন), ভিটামিন সি, খাদ্যতন্তু, ম্যাঙ্গানিজ এবং অন্যান্য মিনারেল, যা শরীরের সামগ্রিক সুস্থতায় ভূমিকা রাখে।
রান্নায় ব্যবহার সহজ এবং স্বাদের বৈচিত্র্য
মিষ্টি আলুর আরেকটি বড় গুণ হলো এর বহুমুখী ব্যবহার। এটি ভাজা, সিদ্ধ, ভর্তা বা ডেজার্ট হিসেবেও রান্না করা যায়। ফলে যেকোনো বয়সী মানুষের রুচি ও চাহিদা অনুযায়ী এটি রান্না করা সম্ভব।
এই সব উপকারিতার পাশাপাশি, মিষ্টি আলুর বিভিন্ন প্রকার রয়েছে—সাদা, কমলা, বেগুনি। এদের স্বাদে সামান্য পার্থক্য থাকলেও পুষ্টিগুণে তারা প্রায় সমান।
সাশ্রয়ী হলেও মৌসুমে কেনাই ভালো
বর্তমানে বাজারে সারা বছরই মিষ্টি আলু পাওয়া যায়, তবে শীতকাল অর্থাৎ শরৎকাল থেকে এটি সবচেয়ে ভালো মানের ও কম দামে পাওয়া যায়। বছরের অন্যান্য সময়েও পাওয়া যায়, তবে তখন দাম কিছুটা বেশি হতে পারে।
শেষ কথা:
যারা অ্যাভোকাডোর মতো স্বাস্থ্যকর কিন্তু তুলনায় কম দামী একটি বিকল্প খুঁজছেন, তাদের জন্য মিষ্টি আলু হতে পারে এক চমৎকার পছন্দ। এটি শুধু অর্থনৈতিকভাবেই সাশ্রয়ী নয়, বরং পুষ্টিগুণ ও স্বাদেও উপযুক্ত এবং পরিবেশবান্ধব একটি বিকল্প।
সতর্কতা: প্রতিদিনের খাদ্যতালিকা সাজানোর সময় পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেয়া ভালো। যাদের ডায়াবেটিস বা বিশেষ ধরনের খাদ্যনিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন, তারা মিষ্টি আলু খাওয়ার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে চলুন।
মারিয়া