ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৬ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২

আবু সাঈদ হত্যা মামলার তদন্ত শেষ, ৩০ জনের সম্পৃক্ততা চিহ্নিত

প্রকাশিত: ১২:৫১, ২৬ জুন ২০২৫; আপডেট: ১৪:১৫, ২৬ জুন ২০২৫

আবু সাঈদ হত্যা মামলার তদন্ত শেষ, ৩০ জনের সম্পৃক্ততা চিহ্নিত

ছবি: সংগৃহীত

গত বছরের ১৬ জুলাই রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। এই হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়েই সূচিত হয় জুলাই গণঅভ্যুত্থান, যার ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। ঘটনার প্রায় এক বছর পর হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনের হাতে এসেছে। মামলায় ৩০ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে বলে নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

 

আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার বড় ভাই রমজান আলী ২০২৪ সালের ১৮ আগস্ট রংপুরের কোতোয়ালি থানায় ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৩০–৩৫ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেন। পরবর্তীতে, ২০২৫ সালের ১৩ জানুয়ারি, সাঈদের পরিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ২৫ জনের বিরুদ্ধে পৃথক অভিযোগ দায়ের করে।

তদন্ত শেষে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ৩০ জনের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ পেয়েছে।

 

এ মামলায় বর্তমানে কারাগারে আছেন: শরিফুল ইসলাম: বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রক্টর, এসআই আমির হোসেন ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়: আবু সাঈদকে গুলি করার প্রত্যক্ষ অভিযোগ রয়েছে এই দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে, ইমরান চৌধুরী আকাশ: তৎকালীন ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক, যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে অভিযুক্ত কর্মকাণ্ডে নেতৃত্ব দেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

 

আবু সাঈদ ছিলেন রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বাবনপুর গ্রামের বাসিন্দা। তাকে ঘিরেই *বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন উত্তাল হয়ে উঠে। তার মৃত্যু আন্দোলনকে বেগ দেয় এবং দেশজুড়ে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটাতেও এই আন্দোলন ভূমিকা রাখে, বলছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

 

প্রসিকিউশন সূত্রে জানা গেছে, আজই তদন্ত প্রতিবেদন আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হতে পারে। এরপর অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য তারিখ নির্ধারণ করা হবে। প্রসিকিউশন জানিয়েছে, ইতোমধ্যেই এই মামলার *ফরমাল চার্জ প্রস্তুত রয়েছে।

এছাড়া, এই মামলাকে কেন্দ্র করেই পরবর্তীতে আরও চারটি মামলা ট্রাইব্যুনালে গিয়েছে, যার মধ্যে শেখ হাসিনাসহ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তির নামও রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানি দ্রুতই শুরু হবে বলে জানা গেছে। গতকাল তদন্ত সংস্থা প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। আজ ট্রাইব্যুনালে সেটি উপস্থাপন হবে। এর মধ্য দিয়েই আবু সাঈদ হত্যার বিচারিক প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপে প্রবেশ করছে।

 

আবু সাঈদ ছিলেন কেবল একজন শিক্ষার্থী নয়, একটি প্রতীক, বৈষম্য, দমন ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে যুব সমাজের প্রতিরোধের মুখ। তার হত্যা মামলার তদন্ত শেষ হওয়া, অভিযুক্তদের চিহ্নিত হওয়া, এবং অভিযোগ দাখিলের প্রস্তুতি সবকিছুই একটি বিচারের প্রতীক্ষায় থাকা জাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।

 

 

সূত্র:https://youtu.be/BrZR-zvhAb8?si=YlejvZM3hIT6HX5o

ছামিয়া

×