
ছবি: সংগৃহীত
দীর্ঘ সময় ক্লান্তি, ক্ষত শুকাতে দেরি হওয়া বা বেশি পানির পিপাসা— এসব ছোট উপসর্গ অনেক সময়ই আমরা গুরুত্ব দিই না। অথচ এসবই হতে পারে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের প্রাথমিক লক্ষণ।
টাইপ-২ ডায়াবেটিস হলো এমন একটি রোগ, যেখানে শরীর রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। এটি ইনসুলিন হরমোনের কার্যকারিতায় সমস্যা হলে হয়। রোগটি সাধারণত ধীরে ধীরে হয়, তাই অনেকেই বুঝে উঠতে পারেন না।
ভারতে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। ভারতীয় গবেষণা সংস্থা ICMR জানায়, বর্তমানে ১০ কোটির বেশি মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। আরও ১৩ কোটির বেশি মানুষ প্রি-ডায়াবেটিক।
ফর্টিস হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. অজয় আগারওয়াল বলেন, বেশি পিপাসা, ঘন ঘন প্রস্রাব, খাওয়ার পরও ক্ষুধা লাগা— এগুলো ডায়াবেটিসের ক্লাসিক লক্ষণ। এছাড়া ক্ষত শুকাতে দেরি হওয়া, চোখে ঝাপসা দেখা ও ক্লান্তি— এসবও লক্ষণ হতে পারে।
তিনি বলেন, সময়মতো রোগ শনাক্ত হলে বড় বিপদ এড়ানো যায়। না হলে ডায়াবেটিস থেকে হৃদরোগ, কিডনি বিকল, অন্ধত্ব ও পা কেটে ফেলার মতো জটিলতা হতে পারে।
তবে ঘরেই এখন সহজে রক্তে সুগার পরীক্ষা করা যায়। স্মার্ট গ্লুকোমিটার ও ডিজিটাল অ্যাপে এই কাজ সহজ হয়েছে।
ডা. আগারওয়াল জানান, নিয়মিত RBS ও HbA1c টেস্ট করলে রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়। অনেক রোগীকে খাবারের আগে-পরে ও ঘুমের আগে রক্তে সুগার মাপার পরামর্শ দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, যাদের পরিবারে ডায়াবেটিস আছে, ৩০ বছরের পর থেকে নিয়মিত টেস্ট করানো উচিত— এমনকি উপসর্গ না থাকলেও। গর্ভবতী নারীদেরও গর্ভকালীন ডায়াবেটিস পরীক্ষায় সতর্ক থাকা দরকার।
ডায়াবেটিস প্রতিরোধে জীবনধারা গুরুত্বপূর্ণ। ৫-৭% ওজন কমানো, স্বাস্থ্যকর খাবার ও নিয়মিত ব্যায়াম টাইপ-২ ডায়াবেটিস ঠেকাতে সাহায্য করে।
এই রোগ প্রতিরোধ বা নিয়ন্ত্রণে ভয় নয়, দরকার সচেতনতা ও নিয়মিত যত্ন। ছোট ছোট পরিবর্তনই ভবিষ্যতে বড় বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
এম.কে.