ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৭ জুন ২০২৫, ১৩ আষাঢ় ১৪৩২

মধ্যপ্রাচ্য সংকটে যুক্তরাষ্ট্রের পাশে দাঁড়াল যে মুসলিম দেশ

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩:১২, ২৭ জুন ২০২৫

মধ্যপ্রাচ্য সংকটে যুক্তরাষ্ট্রের পাশে দাঁড়াল যে মুসলিম দেশ

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বব্যাপী উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দুতে এখন মধ্যপ্রাচ্য। ইসরায়েল ও ইরানের সাম্প্রতিক সংঘাত বিশ্ব পরাশক্তিগুলোর মধ্যে দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগে যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তান মুখোমুখি আলোচনায় বসেছে। সাম্প্রতিক এক ফোনালাপে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ মধ্যপ্রাচ্যে ‘স্থিতিশীল ও দীর্ঘস্থায়ী শান্তি’ প্রতিষ্ঠার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে আলোচনা করেছেন। এই আলাপ শুধু কূটনৈতিক নয়, বরং আগামী দিনের ভূ-রাজনীতির গতিপথ নির্ধারণেও প্রভাব ফেলতে পারে।

যুদ্ধ থামানোর কূটনৈতিক চেষ্টা

মাত্র কয়েকদিন আগেই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন। শুরুটা হয়েছিল ১৩ জুন, যখন ইসরায়েল ইরানের একটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। এরপর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইরান কাতারে অবস্থিত একটি মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালালে আন্তর্জাতিক মহলে চরম উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে।

এমন উত্তপ্ত প্রেক্ষাপটেই রুবিও-শরীফ ফোনালাপ বিশ্ব কূটনীতিতে আলোচনার কেন্দ্রে উঠে আসে।


“ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে পারবে না” — রুবিও

ফোনালাপে মার্কো রুবিও স্পষ্ট ভাষায় হুঁশিয়ারি দেন, “ইরান কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি বা অর্জন করতে পারবে না।”

এই মন্তব্যে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা রুখতেই যুক্তরাষ্ট্র এখন আন্তর্জাতিক জোট গঠনের কৌশলে এগোচ্ছে।

 

পাকিস্তানের ‘দ্বিমুখী’ কূটনীতি

পাকিস্তান একদিকে ইরানের স্বার্থে প্রতিনিধিত্ব করছে ওয়াশিংটনে—যেহেতু যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে সরাসরি কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই, অন্যদিকে ইসরায়েল-মার্কিন হামলার তীব্র নিন্দাও জানিয়েছে ইসলামাবাদ।

তবে সবচেয়ে বিস্ময়কর বিষয়, এই পাকিস্তানই কয়েকদিন আগেই ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিয়েছে! কারণ—গত মাসে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে সাময়িক উত্তেজনা প্রশমনে ট্রাম্পের মধ্যস্থতা।

বিশ্লেষকদের মতে, এই দ্বিমুখী কূটনৈতিক কৌশল বিশ্ব রাজনীতিতে পাকিস্তানকে এক জটিল অথচ প্রভাবশালী অবস্থানে দাঁড় করিয়েছে।

 

কী হতে পারে সামনে?

🔹 সংলাপ ও মধ্যস্থতা: যুদ্ধবিরতির পর এবার নজর নতুন কূটনৈতিক আলোচনায়। ইরান-ইসরায়েল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তানসহ আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর অংশগ্রহণে নতুন সংলাপ শুরু হতে পারে।

🔹 পারমাণবিক উদ্বেগ: ইরানের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে চাপ সৃষ্টি হতে পারে। সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা, পর্যবেক্ষণ দল বা IAEA তৎপরতা বাড়তে পারে।

🔹 নতুন জোট-প্রক্রিয়া: পাকিস্তানের মধ্যস্থতামূলক ভূমিকা বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। ভারতের ভূমিকা, ইসরায়েল-আমেরিকার জোট এবং ইরানের পাল্টা সমর্থক শক্তিগুলোর অবস্থান—সব মিলিয়ে মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে কূটনৈতিক ‘শক্তির ভারসাম্য’ গড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।


ইসরায়েল-ইরান সংঘাত ও শান্তি প্রচেষ্টা এখন শুধু দুই দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। বরং এর সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে যুক্তরাষ্ট্র, পাকিস্তানসহ একাধিক আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শক্তি। ট্রাম্পের নোবেল মনোনয়ন থেকে শুরু করে রুবিও-শরীফ ফোনালাপ—সবকিছুই ইঙ্গিত দিচ্ছে, এক নতুন বিশ্ব কূটনৈতিক সমীকরণের দিকে এগোচ্ছে মধ্যপ্রাচ্য।

Mily

×