
বান্দরবানের ভারত-মিয়ানমার সীমান্ত সংলগ্ন সুংসং পাড়ায় বম স্যোশাল কাউন্সিল ও নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষ থেকে মতবিনিময় সভার ছবি
বান্দরবানের রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলার দুর্গম এলাকায় পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছে। কেএনএফ আতঙ্ক ও অস্থিরতার কারণে দীর্ঘদিন ধরে ভারতের মিজোরাম'সহ বিভিন্ন এলাকায় পালিয়ে থাকা বম সম্প্রদায়ের ১২২টি পরিবার তাদের গ্রামে ফিরে আসেছে। শুক্রবার সকালে বান্দরবান সেনা রিজিয়নের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষযটি নিশ্চিত করা হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন পর পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান জেলার রুমা উপজেলার নিজ গ্রামে ফিরেছে বাস্তুচ্যুত বম জনগোষ্ঠীর পরিবারগুলো। কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সশস্ত্র তৎপরতা এবং সহিংসতার কারণে যে নিরাপত্তাহীনতা দেখা দিয়েছিল, তাতে বাধ্য হয়ে বহু পরিবার পার্শ্ববর্তী দেশের নিরাপদ এলাকায় আশ্রয় নিতে হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সরাসরি তত্ত্বাবধান ও সহযোগিতায় ইতোমধ্যে ১২২টি বম পরিবার নিজ নিজ পাড়ায় নিরাপদে ফিরে এসেছে। এটি প্রত্যাবর্তন বা পুনর্বাসন প্রক্রিয়া নয়, এটি পার্বত্য অঞ্চলে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও সহাবস্থানের পথে এক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি বলে উল্লেখ করা হয়।
এদিকে, ভারতের মিজোরাম'সহ বিভিন্ন এলাকায় পালিয়ে থাকা বম সম্প্রদায়ের লোকজনকে ফিরিয়েরআনার লক্ষে গত বৃহস্পতিবার ভারত মিয়ানমার সীমান্ত সংলগ্ন সুংসং পাড়ায় বম স্যোশাল কাউন্সিল ও নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষ থেকে মতবিনিময় সভা আয়োজন করা হয়। ওই সভায় সেনাবাহিনীর চট্টগ্রাম এরিয়া কমান্ডার, বান্দরবানের রিজিয়ন কমান্ডার, বম স্যোশাল কাউন্সিলের নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকার পাহাড়ি সম্প্রদায়ের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
এসময় বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর (১৬ ইসিবি) অধিনায়ক লে: কর্নেল সৈয়দ আতিকুর করিম জানান, সন্ত্রাস নির্মূলে নিরাপত্তা বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে এবং কেএনএফের আত্মসমর্পণকারীদের সহায়তা করা হচ্ছে। এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং সম্মানজনক সহাবস্থান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এ ধরনের উদ্যোগ ভবিষ্যতেও চলমান থাকবে।
উল্লেখ্য, গত ২০২২ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। বান্দরবান ও রাঙামাটি জেলার নয়টি উপজেলা নিয়ে একটি আলাদা রাজ্য গঠনের ঘোষণাও দেয় তারা। এই সংগঠনটির সঙ্গে দাফায় দফায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষের পর আলোচনার টেবিলেও বসে তারা। এ অবস্থায় জেলার রুমা ও থানচি উপজেলায় কৃষি ও সোনালী ব্যাংকের তিনটি শাখায় সশস্ত্র হামলা করে টাকা ও অস্ত্র লুটের ঘটনা ঘটায় সংগঠনটি। গেল দুই বছরে এ সংগঠনটির সঙ্গে সেনাবাহিনীর সংঘর্ষে ৬ সেনা'সহ বিভিন্ন সময় ২৫ জন নিহত হয়। এঘটনায় গ্রেফতার করা হয় কেএনএফ সন্দেহ দেড় শতাধিক লোকজনকে।
Jahan