
ছবি: সংগৃহীত।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল ইসরাইল—এমন বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ। ইসরাইলি চ্যানেল 13-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই তথ্য প্রকাশ করেন, যা আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
কাটজ বলেন, “আমরা খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলাম। কিন্তু কার্যকর সুযোগের অভাবে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।” তিনি আরও দাবি করেন, খামেনি আগেই বিষয়টি আঁচ করেছিলেন এবং সে কারণে তিনি আত্মগোপনে চলে যান। এমনকি ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (IRGC) নিহত শীর্ষ নেতাদের স্থলাভিষিক্ত কমান্ডারদের সঙ্গেও তিনি তখন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্য এমন এক সময়ে এলো, যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরাইলের যৌথভাবে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিবেদন সামনে আসছে। ওয়াশিংটন পোস্টসহ বিভিন্ন সূত্র বলছে, ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহানের মতো গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক কেন্দ্রে ইসরাইল-যুক্তরাষ্ট্রের বোমা হামলা চালানো হলেও ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত পরিমাণ নিয়ে সংশয় রয়েছে।
এদিকে যুদ্ধ চলাকালে আয়াতুল্লাহ খামেনির কোনো সরাসরি কার্যক্রম বা অবস্থান জনসমক্ষে না আসায় বিষয়টি ঘিরে গুঞ্জন ছড়ায়। তবে তিনি একটি ভিডিও বার্তায় উপস্থিত ছিলেন, যদিও জেনারেলদের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, খামেনিকে হত্যার ঘটনা সংঘটিত হলে যুদ্ধ আরও ভয়াবহ রূপ নিত। কারণ তিনি কেবল ইরানের সর্বোচ্চ নেতা নন, বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি শিয়া মুসলমানের কাছেও তিনি একজন আধ্যাত্মিক পথপ্রদর্শক।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এই সংঘাত প্রসঙ্গে বলেন, “এটি ইরানকে আবার মহান করে তুলতে পারে।” অনেকেই মনে করছেন, ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের এই আগ্রাসনের পেছনে ছিল ইরানি শাসনব্যবস্থার পরিবর্তনের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য।
এদিকে ইরান সরকার দাবি করেছে, তারা ইসরাইলের মূল উদ্দেশ্যগুলো—বিশেষ করে পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ধ্বংস করার পরিকল্পনা—ব্যর্থ করে দিয়েছে। তেহরান বলছে, তাদের ব্যাপক পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাধ্যমে ইসরাইলকে আক্রমণ থামাতে বাধ্য করা হয়েছে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাটজ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “যদি ইরান পারমাণবিক কর্মসূচিতে অগ্রগতি চালিয়ে যায়, তাহলে আমরা আবার হামলার সিদ্ধান্ত নিতে পারি। ট্রাম্প ইতোমধ্যেই আমাদের সবুজ সংকেত দিয়েছেন।”
নুসরাত