
ধূমপান একবার অভ্যাসে পরিণত হলে তা থেকে মুক্তি পাওয়া অনেকের কাছেই অসম্ভব মনে হয়। কিন্তু বাস্তবতা হলো, সঠিক মানসিক প্রস্তুতি আর কিছু সহজ কৌশল অনুসরণ করলেই সিগারেট ছাড়ার পথটা হয়ে উঠতে পারে একদম সহজ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সিগারেট ছাড়তে চাইলে আগে প্রয়োজন মনের শক্তি এবং দৃঢ় সিদ্ধান্ত। যাদের ইচ্ছাশক্তি দৃঢ়, তারা ধাপে ধাপে সিগারেটের পরিমাণ কমিয়ে একসময় সম্পূর্ণভাবে ছাড়তে সক্ষম হন।
১. মানসিক প্রস্তুতি নিন
সিগারেট ছাড়ার প্রথম ধাপ হলো নিজেকে বোঝানো—‘আমি কেন সিগারেট ছাড়তে চাই?’ নিজের পরিবারের মুখ, নিজের শরীরের ক্ষতি ও ভবিষ্যতের কথা ভেবে সিদ্ধান্ত নিন। মনে রাখবেন, আপনার ইচ্ছাই সবচেয়ে বড় শক্তি।
২. ধাপে ধাপে ছাড়ুন—হঠাৎ নয়
একদিনেই সিগারেট ছাড়ার চেষ্টা না করে ধীরে ধীরে কমিয়ে আনুন। যেমন, দিনে ১০টি খেলে তা প্রথমে ৫টি, এরপর ৩টি, তারপর একেবারে বন্ধ করুন। এতে শরীর ও মন দুটোই প্রস্তুত হয়।
৩. বিকল্প অভ্যাস গড়ে তুলুন
হাত ও মুখ ব্যস্ত রাখতে পারেন চুইংগাম, বাদাম, লজেন্স বা পানির বোতল সাথে রাখুন। কেউ কেউ হালকা হাঁটাহাঁটি বা ব্যায়ামের অভ্যাস করেও উপকার পান।
৪. ট্রিগার এড়িয়ে চলুন
চা-কফি, বন্ধুদের আড্ডা কিংবা মানসিক চাপে অনেকেই সিগারেট খেতে চান। এই পরিস্থিতিগুলো আগে থেকেই চিহ্নিত করুন এবং এড়িয়ে চলুন। প্রয়োজনে পরিবেশ পরিবর্তন করুন।
৫. সাপোর্ট সিস্টেম গড়ে তুলুন
আপনার পরিবারের সদস্য, কাছের বন্ধু বা সহকর্মীদের জানিয়ে দিন আপনি সিগারেট ছাড়ছেন। তারা আপনার পাশে থাকবে, উৎসাহ দেবে এবং দুর্বল সময়ে আপনাকে ঠেকাতে সাহায্য করবে।
৬. মোবাইল অ্যাপ ও মেডিটেশনের সাহায্য নিন
বর্তমানে অনেক মোবাইল অ্যাপ রয়েছে যা ধূমপান ছাড়ার অগ্রগতি ট্র্যাক করে। একইসঙ্গে মেডিটেশন বা মাইন্ডফুলনেস মনোসংযোগ বাড়াতে সাহায্য করে।
৭. চিকিৎসকের সহায়তা নিন
নিকোটিন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি (যেমন: নিকোটিন গাম, প্যাচ) নেওয়ার দরকার হতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এগোলে ধূমপান ছাড়া সহজ হয়।
সিগারেট ছাড়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো নিজের ইচ্ছাশক্তিকে জাগিয়ে তোলা। ধীরে ধীরে অভ্যাস পরিবর্তন করে নিজেকে একটি স্বাস্থ্যকর জীবনের দিকে এগিয়ে নিন। মনে রাখুন, আপনি পারবেন—এই বিশ্বাসই সবচেয়ে বড় শক্তি।
মিমিয়া