
ছবি: সংগৃহীত।
ইহুদি জাতি, যাদের পবিত্র কোরআনে ‘বনী ইসরাইল’ নামে উল্লেখ করা হয়েছে, এক সময় ছিল আল্লাহর নির্বাচিত ও প্রিয় জাতি। মহান আল্লাহ তাদেরকে যুগে যুগে নবী ও রাসূল পাঠিয়েছিলেন এবং বিশেষ অনুগ্রহও করেছিলেন। কিন্তু নিজেদের অহংকার, অবাধ্যতা ও অপরাধ প্রবণতার কারণে তারা সেই মর্যাদা হারিয়ে অভিশপ্ত জাতিতে পরিণত হয়।
কোরআনে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, ইহুদিরা একের পর এক নবীকে অস্বীকার করেছে, এমনকি হত্যা পর্যন্ত করেছে। আল্লাহ বলেন: “তাদের ওপর লাঞ্ছনা ও দারিদ্র্য আরোপ করা হয়েছে, আর তারা আল্লাহর রোষানলে পড়েছে। এসব এজন্য যে, তারা আল্লাহর নিদর্শনসমূহ অস্বীকার করেছে এবং অন্যায়ভাবে নবীদেরকে হত্যা করেছে। এ কারণেই তারা অবাধ্য ও সীমালঙ্ঘনকারী হয়ে উঠেছিল।” (সূরা আল-বাকারা: ৬১)
এছাড়াও আল্লাহ আরও বলেন: “তোমরা যখনই এমন কোন রাসূলকে পেয়েছো, যিনি তোমাদের পছন্দমতো কথা বলেননি, তখন তাকে অস্বীকার করেছ এবং কেউ কেউকে হত্যা করেছ।” (সূরা আল-বাকারা: ৮৭)
যদিও কোরআনে নির্দিষ্টভাবে প্রতিটি নবীর নাম বলা হয়নি, তবে হাদীস ও ইতিহাসভিত্তিক নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, ইহুদিরা বহু নবীকে হত্যা করেছে। ইসলামী ঐতিহাসিক গ্রন্থগুলোর তথ্যমতে:
-
হযরত জাকারিয়া (আ.) – তিনি ছিলেন এক মহান নবী, যাকে ইহুদিরা অত্যন্ত নির্মমভাবে হত্যা করে।
-
হযরত ইয়াহিয়া (আ.) – হযরত জাকারিয়ার পুত্র, তাকেও নির্মমভাবে শহিদ করা হয়।
-
হযরত আশিয়াআ (আ.) – তাঁকে ইহুদি শাসক ও সৃষ্ট বিভ্রান্তির কারণে হত্যা করা হয় বলেও উল্লেখ আছে কিছু গ্রন্থে।
বিশিষ্ট সাহাবি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, বনী ইসরাইল একদিনে ৩০০ জন নবীকে হত্যা করেছিল।
ইহুদিরা কেবল নবী হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি। তারা হযরত ঈসা (আ.)-কেও হত্যা করতে চেয়েছিল। তারা বিশ্বাস করত যে, তারা ঈসাকে ক্রুশবিদ্ধ করে হত্যা করেছে। কিন্তু কোরআন এই দাবিকে মিথ্যা বলে ঘোষণা করেছে: “তারা ঈসা (আ.)-কে হত্যা করেনি, বরং তাদের বিভ্রান্তির কারণে তাদেরকে এ বিষয়ে ধোঁকা দেওয়া হয়েছে।” (সূরা আন-নিসা: ১৫৭)
শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর বিরুদ্ধেও তারা হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল। খাদ্যে বিষ মিশিয়ে তাঁকে হত্যা করার চেষ্টা চালায় এক ইহুদি নারী। যদিও সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়, তবে তা তাঁর শরীরে প্রভাব ফেলেছিল।
আল্লাহ তাআলা তাদের এ জঘন্য অপরাধের জন্য দুঃখজনক পরিণতির ঘোষণা দিয়েছেন: “যারা আল্লাহর নিদর্শনকে অস্বীকার করে এবং অন্যায়ভাবে নবীদেরকে হত্যা করে, এবং যারা ন্যায়পরায়ণদের হত্যা করে, তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।”
(সূরা আলে ইমরান: ২১)
ইহুদিদের এই নবী-বিদ্বেষ ও হত্যাকাণ্ড ইতিহাসের এক করুণ অধ্যায়। কেবল এ কারণে নয়, বরং কোরআন এবং সুন্নাহ অনুযায়ী তাদের অবাধ্যতা ও ষড়যন্ত্রের কারণে তারা হারিয়েছে আল্লাহর কৃপা ও সম্মান। ইসলামের দৃষ্টিতে, যারা আল্লাহর প্রেরিতদের অস্বীকার করে ও হত্যাচেষ্টা চালায়, তারা আল্লাহর ক্রোধের শিকার হয় এবং পরকালে কঠিন শাস্তি তাদের জন্য নির্ধারিত।
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=K4ZzydiBnyk&ab_channel=NEWS24
নুসরাত