
ছবিঃ সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের মতো রৌদ্রপ্রচুর দেশেও ভিটামিন ডি ঘাটতির সংখ্যা আশঙ্কাজনক। দেশজুড়ে বাস্কেটবল খেলা, সৈকত ভ্রমণ কিংবা বাইরের বারবিকিউ—সব মিলিয়ে যতই রোদ উপভোগ করুন না কেন, বাস্তবতা হলো—মার্কিন প্রাপ্তবয়স্কদের প্রায় ৪২ শতাংশের শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি রয়েছে।
শুধু হাড় নয়, মস্তিষ্ক-ইমিউনিটিও ক্ষতিগ্রস্ত
অনেকেই জানেন না, ভিটামিন ডি শুধু হাড় মজবুত রাখে না; এটি হরমোনের মতো কাজ করে এবং ইমিউন সিস্টেম, রক্তচাপ, ইনসুলিন স্তর এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উপরেও গভীর প্রভাব ফেলে। তাই এ ঘাটতি অবহেলা করলে শরীরের নানাদিকেই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
কখন রোদ পোহানো সবচেয়ে উপকারী?
বেশিরভাগ মানুষ ভাবেন সকালে হাঁটলে বা সন্ধ্যায় রোদে বসলে ভিটামিন ডি মিলে যাবে। কিন্তু এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা।
শরীর শুধুমাত্র তখনই ভিটামিন ডি তৈরি করতে পারে, যখন সূর্যের UVB রশ্মি সরাসরি ত্বকে পড়ে। আর এই রশ্মি সবচেয়ে কার্যকর থাকে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত।
সকাল ৭টার হাঁটা কিংবা সূর্যাস্তের পরে বসে থাকা যতই স্বাস্থ্যকর মনে হোক, সেগুলো মূলত UVA রশ্মি দেয়—যা ভিটামিন ডি উৎপাদনে কার্যকর নয়।
কতক্ষণ রোদে থাকা নিরাপদ?
সরাসরি রোদে মাত্র ১০ থেকে ১৫ মিনিট, তাও হাত-পা কিছুটা খোলা রেখে, এই সময়টাই যথেষ্ট হতে পারে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি কাটাতে। তবে সানস্ক্রিন ব্যবহার না করে এই সময়টুকু রোদ নেওয়াই ভালো। ফর্সা ত্বকে ভিটামিন ডি বেশি উৎপন্ন হয়, তবে ত্বক গাঢ় হলে সময় কিছুটা বাড়তে পারে।
তবে ২০ মিনিটের বেশি থাকলে বা UV সূচক বেশি থাকলে সুরক্ষা নিতে হবে—ছায়া, পোশাক বা সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে।
রোদও দরকার, আবার সতর্কতাও
ডার্মাটোলজিস্টরা বলছেন, অতিরিক্ত রোদে থাকা ঠিক নয়—বিশেষ করে যাদের ত্বক খুব সংবেদনশীল বা যাদের পরিবারে স্কিন ক্যান্সারের ইতিহাস আছে, তাদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
সাপ্লিমেন্ট নাকি সূর্য?
যারা ৬০ বছরের বেশি, কম রোদে বসবাস করেন বা ত্বক গাঢ়, তাদের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র রোদ যথেষ্ট নাও হতে পারে। তখন সাপ্লিমেন্ট নিতে হতে পারে, তবে ভিটামিন ডি-এর উৎস হিসেবে সূর্যালোকই সবচেয়ে প্রাকৃতিক ও কার্যকর পন্থা।
কাজের ফাঁকে এক কাপ চা নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন
পরেরবার যদি ঘড়িতে দুপুর ১১:৩০ বাজে এবং আপনি জুম কলে থাকেন, একটু সময় বের করে বারান্দায় চলে যান, হাতা গুটিয়ে সূর্যের আলোর নিচে দাঁড়ান—তবেই আপনার শরীর ভিটামিন ডি তৈরি করতে পারবে।
এই ছোট্ট অভ্যাস ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করবে, মেজাজ ভালো রাখবে এবং হাড়-স্নায়ুতন্ত্রের যত্ন নেবে—সেই সঙ্গে কমাবে ওষুধ নির্ভরতা।
রোদ ভয় নয়, বরং সচেতনতার সঙ্গে গ্রহণ করুন। প্রতিদিনের মাত্র ১০ মিনিটের রোদ আপনার শরীরে আনতে পারে বিশাল পরিবর্তন।
ইমরান