ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৬ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২

চার শতকের সাক্ষী নাগরপুরের তেবাড়িয়া মসজিদ

সোলায়মান, কান্ট্রিবিউটিং রির্পোটার,নাগরপুর, টাংগাইল

প্রকাশিত: ১৩:৫২, ২৬ জুন ২০২৫

চার শতকের সাক্ষী নাগরপুরের তেবাড়িয়া মসজিদ

ছবি: জনকণ্ঠ

টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার সলিমাবাদ ইউনিয়নের তেবাড়িয়া গ্রামে অবস্থিত চার শত বছরের পুরোনো তেবাড়িয়া জামে মসজিদ। ইতিহাস, অলৌকিকতা আর স্থাপত্যের সৌন্দর্যে মোড়ানো এই মসজিদকে ঘিরে স্থানীয়দের মাঝে গড়ে উঠেছে গভীর বিশ্বাস।

স্থানীয়রা জানান, এ মসজিদে দান করলেই পূরণ হয় মনের বাসনা। এমনকি রাতের আঁধারে জ্বিনরাও এখানে নামাজ আদায় করে এমন বিশ্বাসও প্রচলিত।

আনুমানিক ১৬০১ খ্রিষ্ট পূর্বে যমুনা নদীর কোলঘেঁষে মৃধা বংশের আব্দুল মালেক খাঁ মৃধা মসজিদটি নির্মাণ করেন। নির্মাণ শেষে তিনি মিম্বারে দাঁড়িয়ে মৃত্যুর স্থান নির্ধারণ করেন এবং পরক্ষণেই সেখানেই ইন্তেকাল করেন।

মসজিদের কেন্দ্রীয় গম্বুজসহ চারপাশে রয়েছে মোট ১২টি মিনার। উত্তর ও দক্ষিণ পাশে আছে দৃষ্টিনন্দন দুটি ঘর। এখানে দাঁড়িয়ে মানুষ দান ও মানত করেন। মসজিদের এক পাশে নির্মাণাধীন রয়েছে প্রায় ১০০ ফুট উঁচু একটি নতুন মিনার।

স্থানীয়রা দাবী করেন, একজন নেককার ব্যক্তি মসজিদে অবস্থান করতেন, যাকে সবাই পাগল ভাবতেন। যমুনার ভাঙনের সময় তিনি নদীর উপর দিয়ে হেঁটে পশ্চিম দিকে চলে যান। পরে নদী মসজিদ থেকে অনেক দূরে সরে যায়।

মসজিদ পরিচালনার জন্য স্থানীয়রা বিপুল পরিমাণ জমি ওয়াক্ফ করেন। জমির ফসল বিক্রির অর্থ মসজিদের খরচে ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে মসজিদে একসঙ্গে প্রায় ২,২০০ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। মৃধা বংশের সদস্যরা মসজিদের পরিচালনার দায়িত্বে আছেন।মসজিদটি এখন ওয়াক্ফ বোর্ডের অন্তর্ভুক্ত। 

স্থানীয়দের দাবি, আধুনিকায়ন করে মসজিদটির ঐতিহ্য আরও সমৃদ্ধ করা হোক।

চারশ’ বছরের প্রাচীন এই মসজিদ শুধু নামাজ আদায়ের স্থান নয়, এটি এলাকার ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং মানুষের বিশ্বাসের প্রতীক। সময় এসেছে এর যথাযথ সংরক্ষণ ও আধুনিকায়নের।

সাব্বির

×