ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৩ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ কি কিয়ামতের আলামত? মহানবীর হাদিসে মিলছে ভবিষ্যতবাণী

প্রকাশিত: ২০:২০, ২২ জুন ২০২৫; আপডেট: ২০:২৭, ২২ জুন ২০২৫

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ কি কিয়ামতের আলামত? মহানবীর হাদিসে মিলছে ভবিষ্যতবাণী

মধ্যপ্রাচ্যে সম্ভাব্য যুদ্ধের দিকে ক্রমেই ধাবিত হচ্ছে ইরান ও ইসরায়েলের দ্বন্দ্ব। প্রতিদিনই চলছে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, পাল্টা আক্রমণ এবং প্রাণহানি। বিশ্লেষকরা একে একটি 'সম্ভাব্য পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ' বললেও, মুসলিম বিশ্বে এ নিয়ে আরও গভীর ভাবনা শুরু হয়েছে এই যুদ্ধ কি সেই যুদ্ধ, যেটির ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম?

হাদিস শরীফে বর্ণিত রয়েছে, “খুরাসান থেকে একটি সেনাবাহিনী কালো পতাকা বহন করে বের হবে, তাদেরকে কেউ থামাতে পারবে না, যতক্ষণ না তারা বাইতুল মুকাদ্দাসে সে পতাকা উত্তোলন করে।” (সহিহ হাদিস, তাবারানী)

এই হাদিস বিশ্লেষণে দেখা যায়, 'খুরাসান' বলতে তৎকালীন পারস্য সাম্রাজ্যের একটি বড় অঞ্চল বোঝানো হয়েছে, যা বর্তমানে ইরান, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের কিছু অংশ নিয়ে গঠিত। আর সেই অঞ্চলেই বর্তমান ইরানের অবস্থান। অর্থাৎ হাদিসের কালো পতাকা বাহিনী আসবে ইরান অঞ্চল থেকেই।

আরেকটি হাদিসে রাসূল (সা.) বলেন, “তোমরা যখন খুরাসান থেকে কালো পতাকা বাহিনীকে দেখতে পাবে, তখন তাদের সঙ্গে যোগ দিও। কারণ, তাদের মাঝেই আছেন আল্লাহর খলিফা—ইমাম মাহাদী।” (ইবনে মাজাহ)

বিশিষ্ট আলেমগণ ব্যাখ্যায় বলেন, এই বাহিনীর নেতৃত্বেই ঘটবে আল মালহামা অর্থাৎ মানব ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ যুদ্ধ। এই যুদ্ধই হবে ইমাম মাহাদীর আগমনের প্রাক্কালে কিয়ামতের বড় আলামতগুলোর একটি। এই যুদ্ধের ফলেই পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হবে ইসলামিক খিলাফত।

১৯৮০ সালে ইসরায়েল জেরুজালেম আইন পাস করে পুরো জেরুজালেম, তথা বাইতুল মুকাদ্দাসকে নিজেদের রাজধানী ঘোষণা করে। যদিও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এটিকে বৈধতা দেয়নি, তারপরও আজ পর্যন্ত আল আকসা মসজিদসহ পুরো অঞ্চল দখলে রেখেছে ইসরায়েল। হাদিসে বলা কালো পতাকা বাহিনী সম্ভবত এই দখলদারিত্বই চ্যালেঞ্জ করবে।

বর্তমানে যে উত্তেজনা চলছে, তা অনেকের দৃষ্টিতে কেবল রাজনৈতিক বা সামরিক সংঘর্ষ নয়, বরং একটি সম্ভাব্য আল-মালহামার সূচনা। বিশেষ করে ১৩ জুন ইসরায়েলের ‘অপারেশন গার্ডিং নাইন’-এ ইরানের উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাসহ সাধারণ মানুষের প্রাণহানি এবং তার পর ইরানের পাল্টা প্রতিক্রিয়া—এসব কিছুই হাদিসের আলোকে ব্যাখ্যার সুযোগ তৈরি করছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, “ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে এই যুদ্ধের ব্যাকরণ অত্যন্ত গভীর। কুরআন-হাদিসে বর্ণিত বহু নিদর্শনের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে বর্তমান বাস্তবতা।” তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এর সবকিছুই আল্লাহর ইচ্ছাধীন।

কিয়ামতের সময় কেউ জানে না। তবুও আজকের এই পরিস্থিতি মুসলিম বিশ্বকে মনে করিয়ে দিচ্ছে প্রিয় নবীর সেই সতর্কবাণী “তোমরা প্রস্তুত থাকো, কারণ কিয়ামত হঠাৎই চলে আসবে।”

মিমিয়া

×