ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২

জুমার দিনে খাবারের সুন্নাত

প্রকাশিত: ১১:৫৩, ২০ জুন ২০২৫

জুমার দিনে খাবারের সুন্নাত

সংগৃহীত প্রতীকী ছবি

জুমার দিন মুসলিম উম্মাহর জন্য একটি বিশেষ দিন। এই দিনের অনেক আমল ও সুন্নাত রয়েছে, যার মধ্যে কিছু খাবার সংক্রান্ত বিষয়ও উল্লেখ করা যায়, যদিও সরাসরি "জুমার দিনে এই খাবার খেতেই হবে" এমন নির্দিষ্ট কোনো ফরয বা ওয়াজিব বিধান নেই। তবে কিছু বিষয় আছে যা পরোক্ষভাবে জুমার দিনের আদবের সাথে সম্পর্কিত এবং স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণের প্রতি ইঙ্গিত দেয়।

জুমার দিনের খাবার সংক্রান্ত সুন্নাত ও আদব নিচে দেওয়া হলো:

১. সকাল সকাল নাস্তা করা: জুমার নামাজ যেহেতু দুপুরে হয়, তাই অনেকে দুপুরের খাবার (লাঞ্চ) দেরি করে খান। সকাল সকাল স্বাস্থ্যকর নাস্তা গ্রহণ করা একটি ভালো অভ্যাস, যা আপনাকে জুমার নামাজের জন্য সতেজ থাকতে সাহায্য করবে। এটি সরাসরি জুমার দিনের সুন্নাত না হলেও, ভালো স্বাস্থ্য ও সময়ের সঠিক ব্যবস্থাপনার জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ।

২. পর্যাপ্ত পানি পান করা: জুমার দিন মসজিদে যাওয়ার আগে এবং পরে পর্যাপ্ত পানি পান করা উচিত। বিশেষ করে জুমার দিন গোসল করা, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হওয়া এবং মসজিদে দীর্ঘ সময় অবস্থান করার কারণে শরীর পানিশূন্য হতে পারে। পর্যাপ্ত পানি পান শরীরকে সতেজ রাখে।

৩. হালকা ও সহজপাচ্য খাবার গ্রহণ: জুমার নামাজে যাওয়ার আগে অতিরিক্ত ভারী খাবার বা ভাজাপোড়া খাবার পরিহার করা উচিত। হালকা ও সহজপাচ্য খাবার খেলে নামাজে মনোযোগ থাকে এবং অলসতা আসে না। ভারী খাবার হজমে সময় নেয় এবং ঘুম ঘুম ভাব নিয়ে আসতে পারে।

৪. মিষ্টি জাতীয় খাবার গ্রহণ (ঐচ্ছিক): কিছু রেওয়ায়েত বা আমলের ভিত্তিতে জুমার দিনে মধু বা মিষ্টি জাতীয় খাবার গ্রহণের একটি প্রচলন রয়েছে, যা সরাসরি সুন্নাত হিসেবে উল্লেখ করা হয় না। তবে এটি বরকত ও স্বাস্থ্যগত দিক থেকে উপকারী হতে পারে। হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ (সা.) মধু পছন্দ করতেন এবং এটি শরীরকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে।

৫. পরিষ্কার ও হালাল খাবার: যেকোনো দিনের মতো জুমার দিনেও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও হালাল খাবার গ্রহণ করা আবশ্যক। খাবার যেন পুষ্টিকর হয় এবং শরীরকে শক্তি যোগায় সেদিকে খেয়াল রাখা উচিত।

৬. মেহমানদারি ও সাদাকা: জুমার দিন মুসলিমদের মধ্যে মেহমানদারি ও সাদাকা করার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। যদি আপনার বাড়িতে মেহমান আসে, তাহলে তাদের আপ্যায়ন করা এবং সম্ভব হলে দরিদ্রদের খাবার খাওয়ানোও সওয়াবের কাজ।

৭. ইফতার ও সাহরির খাবার (যদি রোজা রাখেন): জুমার দিনে যদি আপনি নফল রোজা রাখেন (যেমন সোমবার-বৃহস্পতিবারের সাথে মিলিয়ে), তাহলে সাহরি ও ইফতারের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা উচিত।

সংক্ষেপে, জুমার দিনে খাবারের জন্য খুব নির্দিষ্ট কোনো বাঁধাধরা সুন্নাত নেই। তবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, হালাল, স্বাস্থ্যকর ও সহজপাচ্য খাবার গ্রহণ করা এবং পানিশূন্যতা থেকে মুক্ত থাকা জুমার দিনের আদব ও ইবাদতে সহায়ক।

সাব্বির

×