ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২

১২টি দেশে ১০০ সন্তানের জনক টেলিগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা পাভেল ডুরোভ

প্রকাশিত: ১৫:২৩, ২০ জুন ২০২৫; আপডেট: ১৫:২৬, ২০ জুন ২০২৫

১২টি দেশে ১০০ সন্তানের জনক টেলিগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা পাভেল ডুরোভ

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন বার্তা আদান-প্রদানের জনপ্রিয় অ্যাপ টেলিগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা ও রাশিয়ান প্রযুক্তি উদ্যোক্তা পাভেল ডুরোভ। সম্প্রতি তিনি জানিয়েছেন, তার প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ তিনি উইলের মাধ্যমে ভাগ করে দেবেন তার ১০০ সন্তানের মধ্যেযাদের জন্ম হয়েছে বিশ্বের ১২টি দেশে স্পার্ম ডোনেশনের মাধ্যমে।

ডুরোভের এই ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত উঠে এসেছে ফ্রান্সের খ্যাতনামা সাময়িকী Le Point-এ প্রকাশিত এক বিস্তৃত সাক্ষাৎকারে। তিনি জানান, গত ১৫ বছরে এসব শিশুদের জন্ম হয়েছে তার ডোনেশনের মাধ্যমে, মূলত একজন বন্ধুকে সাহায্য করতে গিয়ে এই প্রক্রিয়ার শুরু। ডুরোভের ভাষায়, ‘আমি সব সন্তানকেইস্বাভাবিকভাবে জন্ম নেওয়া হোক কিংবা ডোনেশনের মাধ্যমেসমান গুরুত্ব দিই। তাদের সমানভাবে ভালোবাসি এবং তাদের ভবিষ্যতের জন্যই আমি উইল করে গেছি।’

ডুরোভ জানান, তার ছয় সন্তান রয়েছে তিনজন আলাদা সঙ্গিনীর সঙ্গে। যদিও উইলে তাদের জন্য ভাগ বরাদ্দ থাকবে, তবু তারা অন্তত ৩০ বছর বয়স না হওয়া পর্যন্ত সম্পদের কোনো অংশ ভোগ করতে পারবে না। ‘আমি চাই তারা নিজের পথে এগিয়ে যাক। উত্তরাধিকার যেন তাদের অলস কিংবা নির্ভরশীল না করে’, বলেন তিনি।

মাত্র ৪০ বছর বয়সেই উইল করার কারণ হিসেবে ডুরোভ বলেন, ‘আমি স্বাধীনতা রক্ষা ও মতপ্রকাশের পক্ষে কাজ করি। এটা অনেক রাষ্ট্রের জন্য অস্বস্তিকর। এই কাজ ঝুঁকিপূর্ণ, শত্রু তৈরি হয়। আমি চাই আমার মৃত্যুর পরও আমার সন্তানরা নিরাপদ থাকুক, আর আমার প্রতিষ্ঠান টেলিগ্রাম যেন নিজের আদর্শ ও নীতিতে অটল থাকে।’

ডুরোভ জানিয়েছেন, তার মৃত্যুর পর টেলিগ্রাম পরিচালনার দায়িত্ব চলে যাবে একটি অলাভজনক ফাউন্ডেশনের হাতে। উদ্দেশ্য হবে টেলিগ্রামকে কোনো বাণিজ্যিক চাপ বা রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত রাখা। ‘ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষা করাই হবে এর প্রধান লক্ষ্য’, বলেন তিনি।

মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় দীর্ঘদিন ধরেই ডুরোভের সঙ্গে রুশ সরকারের সম্পর্ক উত্তেজনাপূর্ণ। ফরাসি কর্তৃপক্ষও টেলিগ্রাম অ্যাপকে ঘিরে অভিযোগ এনেছে, বলা হয়েছে প্ল্যাটফর্মটি অপরাধী চক্রদের মাদক ব্যবসা এবং যৌন নিপীড়নের ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে ডুরোভ এই অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, পাভেল ডুরোভের এই সিদ্ধান্ত শুধু ব্যক্তিগত নয়, বরং প্রযুক্তি-নির্ভর আধুনিক সমাজের পরিবার, উত্তরাধিকার এবং মূল্যবোধ নিয়ে নতুন আলোচনার দ্বারও খুলে দিয়েছে। সন্তান ধারণ, সম্পদ বণ্টন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় তিনি হয়ে উঠেছেন এক অনন্য এবং বিতর্কিত চরিত্র।

 

সূত্র: এনডিটিভি।

রাকিব

×