ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২

সুলতানী মোঘল আমলের সাক্ষী চাটমোহরের শাহী মসজিদ

হৃদয় হোসাইন, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, পাবনা

প্রকাশিত: ১৮:৫৪, ২০ জুন ২০২৫

সুলতানী মোঘল আমলের সাক্ষী চাটমোহরের শাহী মসজিদ

ছবিঃ জনকণ্ঠ

চাটমোহর শাহী মসজিদ বাংলাদেশের একটি প্রাচীন মসজিদ। এটি পাবনার চাটমোহর উপজেলায় অবস্থিত। সুলতানী মোঘল আমলের নিদর্শনের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে ইতিহাস ঐতিহ্যের ৪৫০ বছরের মসজিদটি।

পাবনা জেলার কয়েকটি ঐতিহাসিক পুরাতন স্থাপনার এটি একটি। এক সময় পাবনা জেলার অন্যতম প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্র ছিলো চাটমোহর। মোঘল-পাঠানদের অবাধ বিচরণভূমি। আর সে সময়ে ১৫৮১ খ্রিষ্টাব্দে আবুল ফতেহ মোহাম্মদ মাসুম খাঁ নামের সম্রাট আকবরের পাঁচহাজারী এক সেনাপতির অর্থায়নে। তার ভাই খাঁন মোহাম্মদ কাকশাল একটি মসজিদ নির্মাণ করেন।

এটিই আজকের চাটমোহর শাহী মসজিদ,যা মাসুম খাঁ কাবলির শাহী মসজিদ নামেও পরিচিত। এটি বাংলাদেশের একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান। মসজিদটিতে তুঘরা লিপিতে উৎকীর্ণ একটি ফারসি শিলালিপি ছিলো। বর্তমানে শিলালিপিটি রাজশাহী বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। কালের বিবর্তনে মসজিদটি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছিল। ১৯৮০’র দশকে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এটিকে আগের রূপে নির্মাণ করে। সম্রাট আকবরের এক সেনাধ্যক্ষ মাসুম খাঁ কাবুলী এই মসজিদটি তৈরী করেন।

বাংলাদেশের কয়েকটি সংরক্ষিত ইমারত এর মধ্যে এটি অন্যতম। জাফরী ইটে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। এর দৈর্ঘ্য ৩৪ হাত,প্রস্থ ১৫ হাত,উচ্চতা প্রায় ৩০ হাত বা প্রায় ৪৫ ফুট। তিন গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটির সামনে ইদারার গায়ে খোদাইকৃত ফার্সি অক্ষরে কালেমা তাইয়েবা লিখিত একখন্ড কালো পাথরে মসজিদ নির্মাণের ইতিহাস লিপিবদ্ধ আছে। শাহী মসজিদটি বাংলার মুসলিম স্থাপত্যে একটি নতুন অধ্যায় সংযোজন করে।

এ মসজিদের অভ্যন্তরে ছোটো ছোটো চারটি কুলুঙ্গী রয়েছে। মসজিদের অভ্যন্তরে মেহরাবের চারদিকে আকর্ষণীয় ইটের কারুকার্য রয়েছে। দেয়ালগাত্রে জাফরী ইটের সুন্দর কারুকার্য দেখা যায়। সাসানীয় আমলে (২১২-৬৫১ খ্রি.) ইরানে এ রকম খিলান তৈরীর কৌশল উদ্ভব হয়েছিল। এটি আজও দৃশ্যমান।চাটমোহর বাজারের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিনিয়ত এ শাহী মসজিদ দেখতে দর্শনার্থী আসেন।

আলীম

×