
প্রতি বছর বাংলাদেশে হাজারো মানুষ রক্তের অভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। দুর্ঘটনা, জটিল অস্ত্রোপচার, ক্যান্সার, থ্যালাসেমিয়া ও গর্ভবতী নারীদের মতো অনেক রোগীর বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজন হয় রক্তের। কিন্তু রক্ত তৈরি করা যায় না, কেবল একজন মানুষই আরেকজন মানুষকে রক্ত দিতে পারেন। এ কারণেই রক্তদানে এগিয়ে আসা মানে এক বা একাধিক প্রাণ বাঁচানো।
রক্তদানের সামাজিক উপকারিতা:
রক্তদান একটি মহৎ সামাজিক দায়িত্ব। একজন স্বেচ্ছাসেবী রক্তদাতা শুধু একজন রোগীকেই নয়, তার পরিবারকেও নতুন করে বাঁচার আশা দেন। এটি সমাজে সহমর্মিতা, মানবতা ও দায়িত্ববোধের বার্তা পৌঁছে দেয়। এক ফোঁটা রক্ত যেমন একাধিক প্রাণের আশার আলো, তেমনি একজন দাতা হয়ে উঠতে পারেন অসংখ্য মানুষের চোখে একজন নায়ক।
স্বাস্থ্যগত উপকারিতা:
১. হৃদযন্ত্র ভালো রাখে:
রক্তদানে অতিরিক্ত আয়রন শরীর থেকে বেরিয়ে যায়, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
২. নতুন রক্ত কোষ উৎপাদন হয়:
রক্তদান করার কিছুদিনের মধ্যেই শরীর নতুন রক্ত তৈরি করে, যা রক্ত সঞ্চালন ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর করে।
৩. নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা:
রক্তদানের আগে প্রতিবার রক্তচাপ, হিমোগ্লোবিন ও কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা করা হয়, যা ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সচেতনতায় সহায়ক।
মানসিক শান্তি ও আত্মতৃপ্তি:
কারও জীবন বাঁচাতে পারার অনুভূতি মানুষকে মানসিকভাবে আনন্দ দেয়। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত রক্তদাতারা তুলনামূলকভাবে হতাশা ও মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকেন। এটি একটি “নিজেকে ভালোবাসা” ও “অন্যের পাশে দাঁড়ানোর” আত্মিক অভিজ্ঞতা।
ভুল ধারণা ভাঙুন:
অনেকেই মনে করেন, রক্ত দিলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। একজন সুস্থ মানুষ প্রতি ৪ মাসে একবার রক্ত দিতে পারেন এবং এটি শরীরের জন্য কোনো ক্ষতি করে না, বরং উপকারই করে।
মিমিয়া