ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৮ জুন ২০২৫, ৫ আষাঢ় ১৪৩২

মেহেদি সংস্কৃতি: নারীর রঙিন আবেগ আর ঐতিহ্যের চিত্ররূপ

প্রকাশিত: ২১:৫৩, ১৭ জুন ২০২৫

মেহেদি সংস্কৃতি: নারীর রঙিন আবেগ আর ঐতিহ্যের চিত্ররূপ

সংগৃহীত

ইদ হোক কিংবা বিয়ে নারীর হাতে পায়ের সাজে মেহেদি যেন এক অপরিহার্য অংশ। সময় বদলালেও বদলায়নি এই রঙিন ঐতিহ্যের আবেদন। আজও শহর থেকে গ্রাম, সবখানেই উৎসবের আগমনি বার্তায় মেহেদীর ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়ে, আর হাতেপায়ে ফুটে ওঠে নানান কারুকার্যময় নকশা।

মেহেদি সংস্কৃতির শিকড় বহু প্রাচীন। উপমহাদেশীয় সমাজে বিশেষ করে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে তার সামাজিক ও ধর্মীয় গুরুত্ব সুপ্রতিষ্ঠিত। হেনা বা মেহেদীর ব্যবহার একদিকে যেমন সৌন্দর্যবর্ধক, অন্যদিকে এর রয়েছে ওষধি গুণও।

বিশেষ করে বিয়ের অনুষ্ঠানে ‘মেহেদি নাইট’ বা ‘গায়ে হলুদ’ অনুষ্ঠানের আয়োজন এক রঙিন সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। কনের হাতে গাঢ় মেহেদীর রংকে ভালোবাসা ও সৌভাগ্যের প্রতীক মনে করা হয়। এখন ডিজাইনেও এনেছে বৈচিত্র্য। আরবি, ভারতীয়, গ্লিটার, মারোক্কান নানান ধাঁচে পেশাদার মেহেদি আর্টিস্টদের হাতে তৈরি হয় অসাধারণ সব শিল্পকর্ম।

ঈদের রাতেও মেহেদীর রয়েছে বিশেষ স্থান। চাঁদ দেখা মাত্রই শুরু হয় মেয়েদের মেহেদি পরার উৎসব। শহরে পার্লার ও মেহেদি দোকানগুলোতে ভিড় লেগে যায়, আর গ্রামে ঘরে বসেই মেহেদি বাটার দৃশ্য আজও এক মধুর ঐতিহ্য।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মেহেদি শুধু সাজ নয় এটি মাথার ত্বক ঠান্ডা রাখতে, খুশকি প্রতিরোধ এবং চুল মজবুত করতেও কার্যকর। প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে এর গুরুত্ব অপরিসীম।

তবে দুঃখের বিষয়, এই ঐতিহ্য রক্ষায় সরকারি কোনো উদ্যোগ নেই। স্থানীয় পর্যায়ে কিছু উদ্যোগ থাকলেও জাতীয়ভাবে মেহেদি শিল্প বা সংস্কৃতিকে লালন করার মতো কোনো পরিকল্পনা দৃশ্যমান নয়।

তবু শত সীমাবদ্ধতা পেরিয়েও মেহেদি সংস্কৃতি এখনো টিকে আছে নারীর ভালোবাসা, অনুভব ও আত্মপরিচয়ের প্রতীক হয়ে।
 

হ্যাপী

×