
ছবিঃ সংগৃহীত
সুস্থ হৃদয়ের শুরুটা হয় প্লেট থেকে—এই কথা নিছক কল্পনা নয়, বরং বাস্তবতা। আপনি কী খান, তা শুধু শরীরেই নয়, মুখাবয়বেও পড়ে—এমনটাই বলছে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হার্ট, লাং অ্যান্ড ব্লাড ইনস্টিটিউট (NHLBI)। তারা জানিয়েছে, আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস সরাসরি প্রভাব ফেলে রক্তচাপ, কোলেস্টেরল এবং হৃদরোগের ঝুঁকির ওপর।
সঠিক খাবার বেছে নিলে হার্ট সুস্থ রাখার পাশাপাশি শরীরের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমও সঠিকভাবে চলতে পারে। নিচে এমন ৫টি খাবারের তালিকা দেওয়া হলো, যা আপনার হৃদপিণ্ডের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
১. পাতা-শাক জাতীয় সবজি
স্পিনাচ, কালে, ব্রকলি বা মিষ্টি শালগমের মতো সবুজ পাতাযুক্ত শাকসবজিতে থাকে প্রচুর ভিটামিন, মিনারেল ও ডায়েটারি নাইট্রেট। এগুলো ধমনীকে নমনীয় রাখতে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক। এছাড়াও এতে থাকা ফাইবার কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখে। প্রতিদিন সালাদ, স্যুপ বা স্মুদি আকারে অন্তর্ভুক্ত করুন এই শাকসবজি।
২. বেরি ও তাজা ফলমূল
ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি, কমলা ও আপেলের মতো ফলমূলে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, বিশেষ করে অ্যান্থোসায়ানিন, যা দেহের প্রদাহ ও অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়—এই দুটি কিন্তু হৃদরোগের মূল ঝুঁকি। কমলার মতো সাইট্রাস ফল সরবরাহ করে ভিটামিন C ও সলুবল ফাইবার, যা এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরল হ্রাস করে। NHLBI অনুযায়ী, ফল প্রতিদিনের খাদ্যতালিকার বড় একটি অংশ হওয়া উচিত।
৩. সম্পূর্ণ শস্য
ওটস, ব্রাউন রাইস, বার্লি বা সম্পূর্ণ গমজাত শস্যে থাকে প্রচুর ফাইবার ও ভিটামিন বি, যা রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল কমাতে ভূমিকা রাখে। পরিশোধিত শস্যের বদলে পুরো শস্য দিয়ে তৈরি রুটি ও পাস্তা গ্রহণ করলে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটাই হ্রাস পায়।
৪. বাদাম, বীজ ও স্বাস্থ্যকর তেল
বাদাম ও বীজে রয়েছে আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, ফাইবার ও প্লান্ট স্টেরলস যা কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। অলিভ অয়েল ও অ্যাভোকাডোতে থাকে মনো-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। চিয়া সিড, ফ্ল্যাক্সসিড, আখরোট ও অ্যাভোকাডো ইনসুলিনের প্রতি সংবেদনশীলতা বাড়ায় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক।
৫. চর্বিযুক্ত মাছ
স্যালমন, ট্রাউট, সারডিন ও ম্যাকেরেল মাছ ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডে পরিপূর্ণ। এটি রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড কমাতে, প্রদাহ হ্রাস করতে ও অনিয়মিত হৃদস্পন্দন প্রতিরোধে কার্যকর। NHLBI সপ্তাহে অন্তত দুইবার মাছ খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। ভাজা মাছ নয়, বরং বেক বা গ্রিল করে খাওয়াই ভালো।
✅ শেষ কথা
হৃদয়ের সুস্থতায় ব্যায়াম ও পর্যাপ্ত বিশ্রামের পাশাপাশি সঠিক খাদ্যাভ্যাসও গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিনের প্লেটে এই ৫টি উপাদান রাখুন, আর সময় থাকতেই নিজের হার্ট ভালোবাসার প্রমাণ দিন।
আলীম