ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২

২০২৫ সালে মুনাফা বেড়েছে যে ১৩টি ব্যাংকের, যেখানে টাকা রাখলে লাভবান হবেন আপনিও

প্রকাশিত: ১৭:২৬, ১৭ জুন ২০২৫; আপডেট: ১৭:২৬, ১৭ জুন ২০২৫

২০২৫ সালে  মুনাফা বেড়েছে যে ১৩টি ব্যাংকের, যেখানে টাকা রাখলে লাভবান হবেন আপনিও

ছবি:সংগৃহীত

২০২৪ সালে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে লাভ-লোকসানের একটি মিশ্র চিত্র দেখা গেছে। দেশের বিভিন্ন বেসরকারি ও সরকারি ব্যাংকের মুনাফার হার পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় বেড়েছে বা কমেছে। ‘প্রথম আলো’র তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত ২২টি ব্যাংকের আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এর মধ্যে ১৩টি ব্যাংক মুনাফা করেছে, ৭টি ব্যাংক লোকসানের মুখে পড়েছে এবং ২টি ব্যাংক সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।

যেসব ব্যাংকের মুনাফা বেড়েছে:
১৩টি ব্যাংক ২০২৪ সালে উল্লেখযোগ্য হারে মুনাফা করেছে। এদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক, যার মুনাফা বেড়েছে ৬০৪ কোটি টাকা। এরপর রয়েছে সিটি ব্যাংক (৩৭৬ কোটি), প্রাইম ব্যাংক (২৬১ কোটি), ইস্টার্ন ব্যাংক (১৩৯ কোটি), পুবালী ব্যাংক (৮২ কোটি), বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক (৫২ কোটি), যমুনা ব্যাংক (৪২ কোটি), ব্যাংক এশিয়া (৪১ কোটি), মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক (৩১ কোটি), মধুমতি ব্যাংক (১৬ কোটি) এবং এনসিসি ব্যাংক (৩ কোটি টাকা)।

যেসব ব্যাংক লোকসানের মধ্যে পড়েছে:
অন্যদিকে, ৭টি ব্যাংক উল্লেখযোগ্য পরিমাণ লোকসানের মুখে পড়েছে। এর মধ্যে ডাচ-বাংলা ব্যাংক সবচেয়ে বেশি লোকসান করেছে—৩২৯ কোটি টাকা। এরপর রয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংক (২০৯ কোটি), শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক (১৮৯ কোটি), ট্রাস্ট ব্যাংক (৫৪ কোটি), আইসিবি ইসলামী ব্যাংক (৩৮ কোটি), মিডল্যান্ড ব্যাংক (৩২ কোটি) এবং মেঘনা ব্যাংক (২২ কোটি টাকা)।

ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাসেম জানিয়েছেন, পরিচালন মুনাফা ভালো থাকলেও ভবিষ্যতের ঝুঁকি মোকাবিলায় অতিরিক্ত নিরাপত্তা সঞ্চিতি রাখার কারণে ব্যাংকটির নিট মুনাফা কমেছে। এটি ব্যাংকের ভিত্তি শক্তিশালী করার একটি কৌশল হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।

ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাবে কি?
সম্প্রতি অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়া ও ইউটিউবে প্রশ্ন করছেন, লোকসানে পড়া ব্যাংকগুলো বন্ধ হয়ে যাবে কি না। বিশেষ করে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে এ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে, যাদের অনেকেই নিজেদের আয় বিভিন্ন ব্যাংকে আমানত হিসেবে রেখেছেন।

এই বিষয়ে আশ্বস্ত করে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত কোনো ব্যাংক বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়নি। বরং বাংলাদেশ ব্যাংক দুর্বল ব্যাংকগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন এবং আর্থিক সহায়তা প্রদান।

সতর্কবার্তা:
সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্তিমূলক গুজব থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করা হচ্ছে। শুধুমাত্র বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রমাণিত সংবাদমাধ্যম ও ভেরিফায়েড সোর্স থেকে তথ্য যাচাই করে গ্রহণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সবশেষে, ব্যাংকিং খাতের ওঠানামা একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। সাময়িক লোকসান মানেই ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে—এমন গুজবে কান না দিয়ে বাস্তব তথ্য যাচাই করা জরুরি।

মারিয়া

×