
ছবিঃ জনকণ্ঠ
দিন বদল ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যেতে বসেছে পালপাড়ার সেই রমরমা ব্যবসা। নানা কারণে প্রায় বিলীনের পথে মৃৎশিল্পের ঐতিহ্য। আধুনিকতা আর মানুষের রুচির পরিবর্তনে মাটির তৈরি সামগ্রীর জায়গা দখল করে নিয়েছে প্লাস্টিক,মেলামাইন,স্টিল আর অ্যালুমিনিয়ামের নানা সামগ্রী।
পাবনার সাঁথিয়া,বেড়া,সুজানগর,ফরিদপুর, ভাঙ্গুড়া,চাটমোহরসহ প্রায় উপজেলার পালপাড়া গুলোতে মাটি দিয়ে বিভিন্ন সামগ্রী তৈরির চিত্র দেখা যেতো। গ্রামের ছোট ছেলে-মেয়েরা এক সময় মাটির তৈরি হাঁড়ি-পাতিল,থালা-বাসন,ঘটি,মটকা,সরা,কলস, ব্যাংক,পুতুল,কলকি ও ঝাঝর দিয়ে খেলা করতো।
এসবের বিকল্প হিসাবে এখন মোবাইল গেম,প্লাস্টিকের খেলনা ব্যবহার করে। সাংসারিক জীবনে ও ছিলো মাটির তৈরি কলস,পাতিল,থালা,ইত্যাদির ব্যবহার।
মৃৎশিল্পীর সাথে জড়িতরা জানান,প্রয়োজনীয় উপকরণ ভালো মানের এঁটেল মাটি,যন্ত্রপাতি ও জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি। এ কাজে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন সাধিত না হওয়ায়। নানা কারণে এ পেশা থেকে অনেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। এ পেশায় নেমে এসেছে চরম বিপর্যয়।
আগের দিনে পালপাড়া গুলোতে দেখা যেতো,মাটির হাঁড়ি পাতিল তৈরি করে রোদে শুকাতে দিচ্ছে। আবার কেউ বা ব্যস্ত সময় পার করছেন বিভিন্ন সামগ্রী তৈরিতে,কেউ বা করছেন রং এভাবেই সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলছে তাদের কর্মব্যস্ততা। কুমার পরিবারের নারী-পুরুষ উভয়ে মিলেমিশে এ কাজ করে। আগের দিনে বাজারে মাটির তৈরি জিনিসের প্রচুর চাহিদা থাকলেও এখন অনেকটাই কম। এ কারণে কর্মব্যস্ততা নেই পালপাড়া গুলোতে। যারা অন্য কাজ জানেন না তারা এ পেশাই আঁকড়ে ধরে জীবিকা নির্বাহ করছে।
মৃৎশিল্পীরা জানান,প্রাচীন কয়েকটি শিল্পের মধ্যে মৃৎশিল্প ঐতিহ্যবাহী শিল্প। এই মৃৎশিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সরকারের বহুমুখী উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ খুবই দরকার। তারা আরও বলেন,এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হলে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণ পেলে নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানো যাবে বলে অনেকর ধারণা।
সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে বাঁচতে পারে প্রচীন শিল্পটি। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন এই শিল্প বাঁচিয়ে রাখতে কাজ করছেন।
আলীম