ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৭ জুন ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২

’শান্তি ছিল মাটির ঘরে’—জুড়ীতে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম্য জীবনের আবেগ

জহিরুল ইসলাম সরকার, জুড়ী, মৌলভীবাজার

প্রকাশিত: ২৩:১৭, ১৬ জুন ২০২৫

’শান্তি ছিল মাটির ঘরে’—জুড়ীতে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম্য জীবনের আবেগ

ছবি: জনকন্ঠ

কাদা আর মাটির সংমিশ্রণে তৈরি মাটির ঘরে যেমন মিলে প্রশান্তি তেমনি যেকোনো আবহাওয়াতে মিলে শীতলতা। এক কালে মানুষ প্রচুর আবহাওয়া আর খরতাপ থেকে বাঁচতে আশ্রয় নিত মাটির ঘরে। ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করে একসময় মাটির ঘরই ছিল মৌলভীবাজারের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মাথা গোঁজার ঠাঁই৷ তবে কালের বিবর্তনে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী সেই মাটির ঘর এখন বিলুপ্ত প্রায়। মৌলভীবাজারে দিন দিন প্রবাসীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় বিশাল পরিবর্তন এসেছে বিগত সময়ের চেয়ে বেশি। এখন মৌলভীবাজারের বেশিরভাগ উপজেলাতেই পাকা বাড়ি দেখা যায়।

তবে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘর যে একেবারে নেই তেমনটাও না। সিলেটের মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় এখনও মাটির ঘর রয়েছে। গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া মাটির ঘরের খোঁজ মিলে জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ি, ফুলতলা ও সাগরনাল ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে। বিশেষত চা বাগান অধ্যুষিত পাহাড়ি এলাকায় এখনো কিছু মাটির ঘরের অস্তিত্ব রয়েছে।

সাগরনাল চা বাগানের ১১নং লাইনের সর্বোচ্চ চূড়ায়, সেখানে উচু নিচু টিলার উপরে এখনো দেখা মিলে এসব চমৎকার মাটির ঘরগুলো। ছোট বড় প্রায় অর্ধ শতাধিক ঘর রয়েছে সেখানে। সবুজের সমারোহ আর চোখধাঁধানো মাটির ঘরের এমন দৃশ্য দেখতে কার না ভালো লাগে । তবে সিনেমা কিংবা ছবিতে এমন দৃশ্য প্রায় দেখা গেলেও বাস্তবিক অর্থে এখন এমন দৃশ্য অনেকটা আকাশের চাঁদের মতো। জীবনযাত্রার মান উন্নত হওয়ার ফলে মানুষ এখন শহরমুখী।

চা বাগানের কমল মালাহা নামের এক যুবক বলেন, "আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন আমাদের পরিবার নিয়ে মাটির ঘরে বাস করতাম। মাটির ঘরে বসবাসের কি যেন শান্তি বলে বুঝানোর মতো না। তবে এখন আমরা পাকা ঘর বানিয়েছি, এভাবেই হারিয়ে যাচ্ছে মাটির তৈরি ঘরগুলো।"

সাগরনালের বাসিন্দা সংবাদকর্মী কামরান খান জানান, আজ থেকে এক দশক আগেও সাগরনাল, গোয়ালবাড়ি এবং ফুলতলা ইউনিয়নে বিশেষ করে চা বাগান অধ্যুষিত এলাকায় প্রচুর মাটির ঘর বিদ্যমান ছিল। কালের বিবর্তনের সাথে সাথে আজ মাটির ঘর বিলুপ্ত প্রায়। সে জায়গা দখল করে নিয়েছে ইট-পাথরের পাকা ঘর।

Mily

×