
ছবি: সংগৃহীত
উত্তর-পূর্ব সাইবেরিয়ার জমাটবদ্ধ টুন্ড্রার নিচে হাজার হাজার বছর ধরে চাপা পড়ে ছিল একটি বিস্ময়। প্রায় ৩২ হাজার বছর আগে এক বরফযুগের কাঠবিড়ালি একটি গাছের ফল মাটির নিচে লুকিয়ে রেখেছিল ভবিষ্যতের জন্য। এবং সেই ভবিষ্যত এখন—কারণ, রাশিয়ার একদল বিজ্ঞানী সেই প্রাচীন ফলের কোষকে আবার জীবন্ত করে তুলেছেন, যা থেকে জন্ম নিয়েছে নতুন এক গাছ এবং ফুটেছে সাদা ফুল!
এই গাছটি হলো “ন্যারো-লিফড ক্যাম্পিয়ন” নামে পরিচিত একটি ফুলগাছ। এর বয়স প্রায় ৩০,০০০ বছরেরও বেশি। গবেষণার জন্য ১৯৯৫ সালে সাইবেরিয়ার একটি নদীতীরবর্তী এলাকায় খননের সময় ৭০টির মতো বরফযুগের কাঠবিড়ালির বাসা খুঁজে পান বিজ্ঞানীরা, যেখানে প্রায় ৮ লক্ষাধিক প্রাচীন বীজ ও ফল সঞ্চিত ছিল।
এসব বাসা দীর্ঘ সময় বরফে জমাট থাকার কারণে ফলের কোষ সংরক্ষিত থেকেছে চমৎকারভাবে। এরপর রাশিয়ান একাডেমি অফ সায়েন্সেসের গবেষকরা কোষগুলো ল্যাবে এনে ঠাণ্ডা আবহাওয়ার অনুকরণে চাষ শুরু করেন। গবেষক স্বেতলানা ইয়াশিনা ও তার দল এই টিস্যু থেকে অঙ্কুর গজিয়ে সফলভাবে ৩৬টি ফুলগাছ উৎপন্ন করেন।
এই আবিষ্কার এখন পর্যন্ত সবচেয়ে পুরনো জীবন্ত উদ্ভিদ উৎপাদনের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। এর আগে ইসরায়েলের এক গবেষণায় খুঁজে পাওয়া প্রায় ২ হাজার বছর পুরনো একটি খেজুর গাছের বীজই ছিল এই রেকর্ডধারী।
এ আবিষ্কার শুধু প্রাচীন জৈববৈচিত্র্য সংরক্ষণের পথ দেখায় না, বরং ভবিষ্যতের কৃষি ও জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবেলায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।
মুমু ২