ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২

জুমার দিনে সুরা কাহাফ পাঠের গুরুত্ব ও ফজিলত

প্রকাশিত: ১৩:৫৫, ২০ জুন ২০২৫

জুমার দিনে সুরা কাহাফ পাঠের গুরুত্ব ও ফজিলত

ছবি: সংগৃহীত

ইসলামে জুমার দিনকে সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, “জুমার দিন হচ্ছে শ্রেষ্ঠ দিন, এই দিনেই আদম (আ.) কে সৃষ্টি করা হয়েছে, এই দিনেই তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে এবং এই দিনেই তাঁকে জান্নাত থেকে বের করা হয়েছে।” (মুসলিম)

এই পবিত্র দিনে এমন একটি আমল রয়েছে যা ঈমানদারদের জন্য আলোর উৎস এবং ফিতনা থেকে রক্ষাকারী ঢাল হিসেবে কাজ করে। আমলটি হলো সুরা কাহাফ পাঠ করা।

📖 সুরা কাহাফ কী?

সুরা কাহাফ কুরআনের ১৮তম সূরা। এটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এতে রয়েছে ১১০টি আয়াত। সূরাটিতে চারটি উল্লেখযোগ্য কাহিনি রয়েছে:

  • গুহাবাসী ঈমানদার যুবকদের কাহিনি (আসহাবে কাহাফ)
  • ধনাঢ্য ও দরিদ্র ব্যক্তির ঘটনা
  • মুসা (আ.) ও খিজির (আ.)-এর শিক্ষা
  • যুল-কারনাইন ও যাজুজ-মাজুজের বিবরণ

এসব ঘটনা থেকে ঈমান, ধৈর্য, তাকওয়া ও আল্লাহর উপর নির্ভরতার শিক্ষা মেলে।

📚 সুন্নাহর আলোকে সুরা কাহাফ পাঠের ফজিলত

রাসূলুল্লাহ (সা.) জুমার দিনে সুরা কাহাফ পাঠ করার ব্যাপারে বিশেষভাবে উৎসাহ দিয়েছেন। বিভিন্ন সহিহ হাদিসে এর উল্লেখ পাওয়া যায়—

🔹 আলো লাভের ফজিলত:
রাসূল (সা.) বলেন:

“যে ব্যক্তি জুমার দিনে সুরা কাহাফ পাঠ করবে, তার জন্য দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ে এক আলো জ্বলতে থাকবে।”
📘 (হাদিস: সহিহ আল-জামি, 6470)

🔹 দাজ্জালের ফিতনা থেকে রক্ষা:
তিনি আরও বলেন:

“যে ব্যক্তি সুরা কাহাফের প্রথম দশ আয়াত মুখস্থ করবে, সে দাজ্জালের ফিতনা থেকে নিরাপদ থাকবে।”
📘 (সহিহ মুসলিম)

 

⏰ কখন পড়া উত্তম?

ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে জুমার দিন শুরু হয় বৃহস্পতিবার সূর্যাস্তের পর এবং শেষ হয় শুক্রবার সূর্যাস্তে। তাই এই সময়ের মধ্যে যেকোনো সময় সুরা কাহাফ পাঠ করলে ফজিলত পাওয়া যাবে। তবে ফজরের পর বা জুমার নামাজের পূর্বে তিলাওয়াত করা উত্তম।

✨ কিভাবে আমল করবেন?

  • পবিত্র অবস্থায়, মনোযোগ সহকারে তিলাওয়াত করুন।
  • অর্থ ও তাফসিরসহ পাঠ করলে আয়াতের অর্থ হৃদয়ে ধারণ করা সহজ হয়।
  • পরিবারের সদস্যদের সাথে যৌথভাবে পাঠ বা আলোচনা করলে ফায়দা আরও বেশি হয়।

 

সুরা কাহাফ পাঠ শুধু একটি আমল নয়, বরং এটি একজন মুমিনের জীবনে ঈমানের আলো, আত্মিক প্রশান্তি এবং ভবিষ্যতের ফিতনা থেকে রক্ষার হাতিয়ার। বর্তমান দুনিয়ায় ফিতনার প্রাবল্যের মধ্যে এই আমলটি হতে পারে আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ নিরাপত্তা ও রহমতের ঢাল। তাই প্রতিটি ঈমানদার মুসলমানের উচিত জুমার দিন এ সুন্নত আমলটি নিয়মিতভাবে পালন করা।

আঁখি

×