
বয়সভেদে শিশুদের খাওয়ার পরিমাণ ও আগ্রহ পরিবর্তিত হতে পারে। বিশেষ করে ১-৫ বছর বয়সে এটি খুব সাধারণ। কিছু সাধারণ কারণ:
-
বৃদ্ধির গতি কমে যাওয়া:
ছোট বাচ্চাদের প্রথম বছরে যে দ্রুত বৃদ্ধি হয়, তার পরবর্তী বছরে তা ধীর হয়। তাই তাদের ক্ষুধাও তুলনামূলক কমে যেতে পারে। -
স্বাধীনতা প্রকাশ:
২-৩ বছর বয়সে বাচ্চারা নিজস্ব পছন্দ-অপছন্দ জানাতে শুরু করে। খাবার নিয়েও তারা “না” বলা শিখে যায়। -
ফোকাসের অভাব:
খেলার প্রতি মনোযোগ বাড়ে, ফলে খাবারের প্রতি আগ্রহ কমে যায়। -
অসুস্থতা বা অস্বস্তি:
ঠান্ডা, জ্বর, পেটের গ্যাস, দাঁত ওঠা ইত্যাদি সাময়িক অস্বস্তির সময় খাওয়া কমে যেতে পারে।
কোন কোন বিষয় চিন্তার কারণ হতে পারে?
যদি নিচের লক্ষণগুলো দেখা যায়, তাহলে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত:
-
অনেক দিন ধরে কিছুই খেতে না চাওয়া
-
ওজন কমে যাওয়া বা স্বাভাবিকভাবে না বাড়া
-
খাওয়ার সময় মুখ ঘুরিয়ে নেওয়া, বমি করা বা চিবাতে অস্বস্তি
-
খাবার দেখে ভয় পাওয়া বা অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া
-
শিশুর কার্যকলাপ ও শক্তি একেবারে কমে যাওয়া
🔴 এই উপসর্গ থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
কীভাবে আপনি সহজে এই সমস্যা সামলাতে পারেন?
১. চাপ না দিয়ে খাবার দিন:
জোর করে খাওয়ানোর চেষ্টা করলে শিশুরা খাবারকে আরও ঘৃণা করতে পারে।
২. নির্দিষ্ট রুটিন অনুসরণ করুন:
প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে খাবার ও স্ন্যাকস দিন। এতে খিদে তৈরি হয়।
৩. ছোট অংশে পরিবেশন করুন:
বেশি খাবার প্লেটে দিলে শিশু ভয় পেতে পারে। অল্প করে দিন, চাইলে আবার দিন।
৪. খাবার আকর্ষণীয় করে তুলুন:
রঙিন সবজি, ছোট আকৃতির রুটি বা চিজ দিয়ে নানা আকৃতি তৈরি করে দিন।
৫. খাবারের সময় টিভি বা মোবাইল বন্ধ রাখুন:
মনোযোগ যেন থাকে খাবারের দিকে।
৬. শিশুকে রান্নার সময় ছোট কাজে যুক্ত করুন:
এতে তাদের আগ্রহ বাড়ে—“আমি যেটা বানিয়েছি, সেটা খেতে চাই!”
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত?
-
৭–১০ দিনের বেশি সময় ধরে খাওয়া একদম কমে গেলে
-
শিশু দুর্বল, ক্লান্ত, বা অলস হয়ে যাচ্ছে
-
ওজন কমে যাচ্ছে
-
বারবার বমি করছে বা খাবার গলায় আটকে যাচ্ছে
-
মুখ বা গলায় সমস্যা দেখা যাচ্ছে
সব শিশুর খাওয়ার ধরণ এক নয়। ধৈর্য ধরে, ভালোবাসা দিয়ে এবং কিছু ছোট কৌশল ব্যবহার করে আপনি ধীরে ধীরে তাদের আগ্রহ ফিরিয়ে আনতে পারবেন। তবে যদি সন্দেহ হয়, দেরি না করে একজন শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
Jahan