
ছবি: সংগৃহীত।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ থাকবে কিনা, সেই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণভাবে নির্বাচন কমিশনের ওপর নির্ভর করছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূস।
সম্প্রতি লন্ডনে বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি। ইংরেজি ভাষায় নেওয়া সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেন সাংবাদিক রাজিনী বৈদ্যনাথন।
বিবিসির এক প্রশ্নে ড. ইউনূস বলেন, “আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হয়নি, বরং তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। এর আওতায় নির্বাচনও পড়ে।”
তিনি আরও বলেন, “নির্বাচন অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে কিনা, তা নির্ভর করে জনগণের অংশগ্রহণের ওপর, নির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক দলের উপস্থিতির ওপর নয়। জনগণ যদি ভোট দিতে পারে, তাহলে নির্বাচন অন্তর্ভুক্তিমূলকই হবে।”
শেখ হাসিনার বিচার সম্পর্কে ড. ইউনূস বলেন, “তার বিরুদ্ধে বিচারিক কার্যক্রম ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে আন্তর্জাতিক আইনানুগ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে। তবে তাকে ‘ধরে আনার’ মতো ক্ষমতা কারও নেই।”
তিনি আরও বলেন, “ভারতে অবস্থান করাটা বড় সমস্যা নয়, কিন্তু সেখান থেকে তিনি যে ভাষণ ও বার্তা দিচ্ছেন, সেটাই সমস্যার উৎস।”
আন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আওয়ামী লীগের শত শত নেতা-কর্মী ও সমর্থক গ্রেপ্তার হওয়ায় আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। এ বিষয়ে ড. ইউনূস বলেন, “আমাদের বর্তমান সরকারকে আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে তুলনা করা মানে বাংলাদেশের বাস্তবতা না বোঝা।”
রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও এই সাক্ষাৎকারে কথা বলেন ড. ইউনূস। তিনি বলেন, “সবাই শুধু খাদ্য ও সাহায্য নিয়ে ব্যস্ত। কিন্তু রোহিঙ্গাদের কীভাবে নিজ দেশে ফিরিয়ে পাঠানো যাবে, তা নিয়ে কার্যকর কোনো আলোচনা নেই। অথচ সেটাই একমাত্র স্থায়ী সমাধান।”
তিনি আরো জানান, “রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের সামরিক সরকারের ভয়ে দেশে ফিরতে চাচ্ছে না, কিন্তু বাংলাদেশে তাদের স্থায়ীভাবে একীভূত করাও সম্ভব নয়। কারণ, স্থানীয় জনগণের মধ্যে এর বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া রয়েছে। তাঁরা দেখতে পাচ্ছে যে, আন্তর্জাতিক সহায়তা কেবল রোহিঙ্গাদের জন্য আসছে, অথচ নিজেরা কষ্টে দিন কাটাচ্ছে।”
ড. ইউনূস স্পষ্ট করে বলেন, “বাংলাদেশের নিজের অনেক সমস্যা রয়েছে। আমরা আর একটি নতুন জনগোষ্ঠীর বোঝা বইতে পারবো না।”
নুসরাত