ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২২ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২

বিমানের পর এবার ইরানের সাহায্যে চীনের জাহাজ

প্রকাশিত: ১৯:৪৯, ২১ জুন ২০২৫

বিমানের পর এবার ইরানের সাহায্যে চীনের জাহাজ

ছবি: সংগৃহীত

ইরান-ইসরায়েল চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে চীনের ভূমিকা ঘিরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। যুদ্ধের সরাসরি পক্ষ না হলেও চীন এমন এক কৌশলগত অবস্থান নিয়েছে, যা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে ইসরায়েল এবং তার পশ্চিমা মিত্ররা।

 

 

সাম্প্রতিক সময়ে পারস্য উপসাগরে চীনা গুপ্তচর জাহাজ ঘোরাফেরা করছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে দুটি উল্লেখযোগ্য যুদ্ধজাহাজ হচ্ছে পিএলএ টাইপ ৮৫৫ এবং টাইপ ৮১৫। ধারণা করা হচ্ছে, এই জাহাজগুলো ইরানকে গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করছে এবং আঞ্চলিক উত্তেজনা ও পশ্চিমা মিত্র নৌবাহিনীর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, এই তথ্যে ইঙ্গিত মিলছে যে, সংঘাতকালীন তথ্য সংগ্রহ করে তা ইরানের সামরিক কৌশলে ব্যবহৃত হতে পারে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ যত তীব্র হচ্ছে, ততই চীনের এই ‘নীরব সমর্থন’ স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

এদিকে যুদ্ধের শুরু থেকে চীন ইরানের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার ইঙ্গিত* দিচ্ছে। দেশটির রাষ্ট্রীয় বক্তব্যে ইসরায়েলের হামলার নিন্দা জানানো হয়েছে। এমনকি চীনের প্রেসিডেন্ট সি জিনপিং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথাও বলেছেন যুদ্ধ নিরসনের বিষয়ে।

 

 

তবে চীন যে কেবল কূটনৈতিক বিবৃতি দিয়ে দায়িত্ব শেষ করছে না, তার প্রমাণ মিলেছে কার্গো বিমানের গতিবিধিতে। যুদ্ধ শুরুর একদিন পর চীন থেকে একের পর এক বোইং ৭৪৭ ধরনের মালবাহী উড়োজাহাজ ইরানের দিকে যাত্রা করেছে, যা নিয়ে গভীর রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। প্রথম বিমানের উড্ডয়ন হয় ইসরায়েলের ইরানে হামলার ঠিক একদিন পর। দ্বিতীয়টি পরদিন চীনের উপকূলীয় শহর থেকে যাত্রা করে। তৃতীয়টি সোমবার সাংহাই থেকে উড়ে যায় এবং উত্তর চীন, কাজাকস্থান, উজবেকিস্তান ও তুর্কমেনিস্তান হয়ে ইরানে প্রবেশের সময় রাডার থেকে অদৃশ্য হয়ে যায়।

 

 

 

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই উড়োজাহাজগুলো সম্ভবত সামরিক সরঞ্জাম বা অস্ত্র বহন করছিল। কারণ বোইং ৭৪৭ সাধারণত সামরিক রসদ পরিবহনে ব্যবহৃত হয়।

চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ইরানের পতন ঘটলে তা চীনের অর্থনৈতিক ও জ্বালানি স্বার্থের জন্য বড় আঘাত হতে পারে। তাই চীন ইরানকে সামরিকভাবে সহায়তা করছে, এমন ধারণা পুরোপুরি উড়িয়ে দিচ্ছেন না নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।

সামরিক ও কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই সংঘাত ধীরে ধীরে একটি আন্তর্জাতিক মহাযুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, যেখানে চীন ও রাশিয়া মিলে পশ্চিমা জোটের বিরুদ্ধে ইরানকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে পারে।

 

ছামিয়া

×