
যুদ্ধের সম্ভাবনা দিনে দিনে বাস্তব হয়ে উঠছিল ঠিকই, কিন্তু গত এক সপ্তাহে ইরানের নানা প্রান্ত থেকে যারা ঘরছাড়া হয়েছেন হাজার মানুষ । তাদেরই একজন আল জাজিরাকে নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলেন, ইরানের নানা প্রান্ত থেকে যারা ঘরছাড়া হয়েছেন – আমিও যাদের একজন – তাঁদের অনেকেই হয়তো ভাবতেও পারেননি এতটা হঠাৎ, এতটা নির্মমভাবে বাস্তবতা আঘাত হানবে।
প্রথম বিস্ফোরণের শব্দে ১৩ জুন রাত ৩টার কিছু পর তেহরানের মানুষ ঘুম থেকে লাফিয়ে ওঠে, যখন ইসরায়েলের বহু যুদ্ধবিমান ও ড্রোন দেশজুড়ে কয়েক ডজন স্থানে হামলা চালায়। একইসঙ্গে, ইসরায়েলি গুপ্তচরেরা ইরানের ভেতর থেকেই বিস্ফোরক বোঝাই কোয়াডকপ্টার ও ‘স্পাইক’ গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ে। রাজধানীতে গোটা আবাসিক ভবন ধ্বংস হয়ে যায়, সামরিক ঘাঁটি ও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যাটারিগুলিকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়, এবং ইসফাহান প্রদেশের নাতাঞ্জে পর্বতের ভেতরে গড়া পারমাণবিক স্থাপনাগুলিকে রক্ষা করা সুবিধাগুলিও লক্ষ্য করে বোমাবর্ষণ চালানো হয়। নিহত হন বহু বেসামরিক মানুষ, শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা এবং পরমাণু বিজ্ঞানী।
তিনি বলেন, আমি ও আমার পরিবার—আমার বান্ধবী, মা এবং আমাদের চারটি বিড়ালসহ—তেহরান ছেড়ে যাই। বোমা পড়ার শব্দের মধ্যে আমরা তাড়াহুড়ো করে বের হই। রাস্তায় ছিল মানুষের ঢল, যাত্রাপথে ছিল দীর্ঘ যানজট। পশ্চিম তেহরানের বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েলি বোমা পড়ছিল। বিস্ফোরণের ভয়ানক শব্দ, যা যতবারই শোনা হোক, পেটের মধ্যে গা ছমছমে একটা কাঁপুনি জাগায় – আমাদের তাড়াহুড়ো আরও বাড়িয়ে তোলে। বিশেষত, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী একই সময়ে নতুন করে তেহরান ত্যাগের হুমকি দেয় এবং রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের সদর দপ্তরে বোমা হামলা চালায়। ইসরায়েলি হামলার ঝুঁকি থেকে দূরে থাকতে আমরা চলে আসি গিলান প্রদেশে।
ইরানের উত্তরের মাজানদারান, গিলান ও গোলেস্তান প্রদেশে এখন লাখো মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। স্থানীয়রা নিজেদের ঘর খুলে দিচ্ছে শরণার্থীদের জন্য। তবে, সরকার মৌলিক চাহিদা মেটানোর আশ্বাস দিলেও বাস্তবতা হলো, ৯ কোটি মানুষ গভীর অনিশ্চয়তায়।
সূত্র - https://www.aljazeera.com/news/2025/6/21/tehran-is-in-shock-and-we-have-fled-with-heavy-hearts
সানজানা