ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২

ইরানের হামলার ভয়ে নৌপথে সাইপ্রাস পালাচ্ছে ইসরায়েলিরা!

প্রকাশিত: ১৯:৪৫, ২১ জুন ২০২৫

ইরানের হামলার ভয়ে নৌপথে সাইপ্রাস পালাচ্ছে ইসরায়েলিরা!

ছ‌বি: সংগৃহীত

ইরান-ইসরায়েল সংঘর্ষে পরিস্থিতি চরম রূপ নিয়েছে। ১৩ জুন রাতে ইসরায়েল বন্ধ করে দেয় তাদের আকাশপথ। বেনগুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কার্যত অচল হয়ে পড়ে। আতঙ্কে দেশ ছাড়তে মরিয়া হয়ে ওঠেছেন স্থানীয় নাগরিক ও বিদেশিরা।

জর্ডান ও মিশরের সীমান্ত দিয়ে অনেকে পালানোর চেষ্টা করছেন। তবে সীমান্তে সময়সীমা আর অপেক্ষার ভিড়ে অনেকেই বেছে নিচ্ছেন সমুদ্রপথ। হ্যাঁ, ইয়ট বা প্রমোদতরী ভরসা করেই এখন শত শত মানুষ রওনা হচ্ছেন সাইপ্রাসের দিকে।

দৃশ্যটা যেন কোনো যুদ্ধবিধ্বস্ত সিনেমার দৃশ্য! ইসরায়েলের হিজলিয়া মেরিনা পর্যটন কেন্দ্র নয়, যেন এখন এক অস্থায়ী বিমানবন্দরে পরিণত হয়েছে। সকাল হলেই সেখানে জড়ো হচ্ছেন শত শত মানুষ। কারো হাতে ব্যাগ, কারো কোলে শিশু। উদ্দেশ্য একটাই— যেভাবেই হোক দেশ ছাড়তে হবে।

নিরাপত্তাহীনতার এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েলিরা বলছেন, আর পারছেন না। প্রতিদিন মিসাইলের শব্দে ঘুম ভাঙে। ছোট ছোট সন্তানদের নিয়ে কেউ আর থাকতে চান না। তাই অনেকে খরচ যতই হোক, দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।

ইসরায়েলের ‘হারেতস’ পত্রিকার তথ্য মতে, ইয়ট ভাড়ার দাম এখন আকাশ ছোঁয়া। একজন যাত্রীর জন্য কেউ কেউ ৭১৩ ডলার পর্যন্ত নিচ্ছেন। একজন জানিয়েছেন, তার কাছ থেকে চাওয়া হয়েছিল ৬০০০ সেকেল। এসব যাত্রার নেই কোনো অনুমোদন, নেই কোনো বীমা। তবুও নিরুপায় মানুষ সাগরপথে দেশ ছাড়ছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘সি এক্সিট’ নামে একটি গ্রুপে এখন শুধু অফার আর অনুরোধ। সবাই চাইছেন, শুধু একটা জায়গা— যেভাবেই হোক যেন সাইপ্রাস পৌঁছানো যায়। ইয়ট মালিকরা বলছেন, টাকা দিলে আমরা নিচ্ছিই, তবে অনেকেই লাইসেন্স ছাড়াই যাত্রী নিচ্ছে—যা ঝুঁকিপূর্ণ।

বর্তমানে প্রায় ৪ হাজার বিদেশি পর্যটক ইসরায়েলে আটকা পড়েছেন। অন্যদিকে বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় এক থেকে দুই লাখ ইসরায়েলি বিদেশে ফিরে যেতে পারছেন না।

১৩ জুন ভোরে ইসরায়েল চালায় “অপারেশন রাইজিং লায়ন”, ইরানের একটি পারমাণবিক ঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় ইরান ছুঁড়ে দেয় ডজন ডজন ব্যালিস্টিক মিসাইল এবং হুঁশিয়ারি দেয়— হামলা বন্ধ না হলে আরও ভয়াবহ প্রতিক্রিয়া আসবে।

এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে অসংখ্য মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। কেউ বলছেন, তাদের এখানে আর স্থায়ী আবাস নেই, তাই দেশে ফিরতে চান। কেউ যাচ্ছেন প্রবাসে থাকা স্বজনদের কাছে। আবার কেউ খোলাখুলিই বলছেন আর মিসাইল সহ্য হচ্ছে না।

ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/n8OtBmAN9PY?si=vNN0YUvKXAr1P6_f

এম.কে.

×