ছবিঃ সংগৃহীত
বর্তমান ভূমি আইন ও ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইনের বিধিমালায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে—তিনটি নির্দিষ্ট কারণে কন্যারা পিতার, স্বামীর বা ভাইয়ের সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হতে পারেন। এমনকি নতুন ডিজিটাল রেকর্ডেও তাদের নাম যুক্ত হবে না।
সংশ্লিষ্টদের মতে, এটি কেবল উত্তরাধিকার সূত্রে নয়, রেকর্ডভুক্তির ক্ষেত্রেও চিরস্থায়ী প্রভাব ফেলবে। ফলে এমন অনেক কন্যা রয়েছেন, যাঁরা তাদের বৈধ অধিকার থেকেও সম্পূর্ণভাবে বঞ্চিত হয়ে যাবেন।
কোন তিন কারণে মেয়েরা সম্পত্তি পাবে না?
১. ১৯৬১ সালের ১৫ জুলাইয়ের আগে পিতার জীবিত থাকাকালীন কন্যার মৃত্যু
যদি কোনো কন্যা তার পিতার জীবিত থাকাকালীন ১৫ জুলাই ১৯৬১ সালের পূর্বে মারা যান, তবে তার কোনো সন্তান বা ওয়ারিশ (প্রতিনিধি) থাকলেও, তারা পিতার সম্পত্তি থেকে কোনো অংশ পাবে না। কারণ, সেই সময়ের আইন অনুযায়ী, মৃত কন্যার ওয়ারিশদের উত্তরাধিকার স্বীকৃত নয়।
২. পিতাকে বা মাতাকে হত্যা করলে
কন্যা যদি পিতা বা মাতাকে হত্যা করেন (অপরাধ প্রমাণিত হয়), তাহলে তিনি বা তার পক্ষের কেউ পিতামাতার সম্পত্তির উত্তরাধিকার হবেন না। বাংলাদেশের আইনে স্পষ্ট বলা আছে—হত্যাকারী কোনোভাবেই সম্পত্তির অধিকারী হতে পারে না, এমনকি জেল খেটে ফিরে এলেও না।
৩. পিতার জীবিত থাকাকালীন সম্পত্তি অন্যকে হেবা করলে
যদি পিতা জীবিত থাকাকালে সম্পত্তি হেবা (দানপত্র) করে ছেলেকে বা অন্য কোনো কন্যাকে দিয়ে দেন, এবং উদ্দেশ্য থাকে কাউকে বঞ্চিত করা, তাহলে যার নামে হেবা করা হয়নি সেই কন্যা সম্পত্তি পাবে না। হেবা দলিল বাংলাদেশে অত্যন্ত কার্যকর এবং আদালতে এটি শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হয়।
ডিজিটাল জরিপেও প্রতিফলন
বর্তমানে দেশে যে ভূমি ডিজিটাল রেকর্ডিং প্রক্রিয়া চলছে, তাতে এই তিনটি শর্তের আওতায় পড়া কন্যারা তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করাতে পারবেন না। ফলে ডিজিটাল খতিয়ানে তারা স্থায়ীভাবে বঞ্চিত থাকবেন।
আইনি পরামর্শ:
আইনজীবীরা পরামর্শ দিচ্ছেন, কেউ যদি সম্পত্তি নিয়ে আদালতের স্মরণাপন্ন হতে চান, তবে মামলার আগে সঠিক তথ্য ও আইন বুঝে নিতে হবে। কারণ, শুধু মামলা করলেই সম্পত্তি ফিরে পাওয়া যাবে না, বরং ভুল মামলায় সময় ও অর্থ দুই-ই নষ্ট হবে।
উপসংহার
ভবিষ্যতের ডিজিটাল রেকর্ড প্রক্রিয়ায় এই তিনটি কারণে অনেক নারী ও তাদের উত্তরসূরি সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হবেন, এমনই সতর্ক বার্তা দিয়েছেন ভূমি আইন বিশেষজ্ঞরা। সঠিকভাবে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার পূর্বে বিষয়গুলো ভালোভাবে বোঝার পরামর্শও দিয়েছেন তারা।
ইমরান
