ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২০ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২

সুখবর! মাত্র ২টি প্রমাণ থাকলেই জমির মালিকানা আপনার, জেনে নিন কীভাবে

প্রকাশিত: ২১:৫১, ১৯ জুন ২০২৫

সুখবর! মাত্র ২টি প্রমাণ থাকলেই জমির মালিকানা আপনার, জেনে নিন কীভাবে

ছবি: সংগৃহীত।

নতুন ভূমি আইনে বড় পরিবর্তন এসেছে। এখন মাত্র দুটি সঠিক প্রমাণ থাকলেই আপনি আপনার জমির মালিকানা নিশ্চিত করতে পারবেন। জমি নিয়ে প্রতারণা ও জালিয়াতি ঠেকাতে বাংলাদেশ সরকার যে তিনটি নতুন ভূমি আইন পাস করেছে, তার আওতায় সম্পত্তির মালিকানা প্রমাণ অনেক সহজ ও সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে।

স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ শুরু করেছিল শূন্য হাতেই। অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে একসময় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই দেশকে বলেছিলেন "তলাবিহীন ঝুড়ি"। তবে সময়ের ব্যবধানে বাংলাদেশ প্রমাণ করেছে যে তা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে। তারই একটি নজির এই ভূমি খাতে ডিজিটাল রূপান্তর।

কী এই দুটি মূল প্রমাণ?
১. দলিল (বিক্রয় সূত্রে মালিকানা):
জমি কেনার দলিল হলো মালিকানা প্রমাণের প্রথম এবং সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ দলিল। এই দলিলে বিগত ২৫ বছরের মালিকানার ধারাবাহিকতা থাকা বাধ্যতামূলক। দলিল অবশ্যই নিবন্ধিত হতে হবে সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে, যার সত্যতা রাষ্ট্র স্বীকৃত।

২. রেকর্ড/খতিয়ান (ওয়ারিশ সূত্রে মালিকানা):
জমির মালিকানা যদি উত্তরাধিকার সূত্রে হয়ে থাকে, তাহলে সিএস, এসএ, আরএস, বিআরএস ও সিটি জরিপ অনুযায়ী খতিয়ান থাকতে হবে। এই খতিয়ানগুলো সরকারি জরিপে প্রণীত এবং তা মালিকানা দাবি করার বৈধ দলিল।

আইনের নতুন রূপ কী বলছে?
ভূমি আইন অনুযায়ী, যদি দলিলে বা খতিয়ানে কোন ভুল বা অসঙ্গতি থেকে থাকে, তবে তা এখন সহজেই সংশোধনযোগ্য। রেকর্ডে ভুল থাকলে “মিসকেস” বা “বিবিধ মামলা” দিয়ে সংশোধনের সুযোগ রাখা হয়েছে। কারও জমি যদি অন্যের নামে রেকর্ড হয়, তাহলে তিনি ট্রাইবুনাল বা আদালতের মাধ্যমে তা ঠিক করে নিতে পারবেন।

ভূমি প্রতারণা ও দণ্ড:
নতুন আইনে ভূমি জালিয়াতির জন্য কঠোর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। নিচের অপরাধগুলো করলে সর্বোচ্চ ৭ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড হতে পারে:

  • অন্যের জমিকে নিজের বলে প্রচার করা
  • মিথ্যা পরিচয়ে জমি হস্তান্তর
  • তথ্য গোপন করে দলিল সম্পাদন
  • মিথ্যা তথ্য দিয়ে সরকারি রেকর্ড সংশোধনের চেষ্টা

আইন কার্যকরের অগ্রগতি:
এই আইনের গেজেট ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। দেশের বিভিন্ন বিভাগ ও জেলায় এ আইন কার্যকর করা হচ্ছে। ভূমি অফিস ডিজিটালাইজড হওয়ায় এখন অনেক সহজে জমির সঠিক মালিক চিহ্নিত করা সম্ভব হচ্ছে।

বিশেষ সতর্কতা:
আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জমি কার নামে আছে তা জানার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উপায় হচ্ছে দলিল ও খতিয়ান। এই দুইটি প্রমাণ না থাকলে ভবিষ্যতে মামলা-মোকদ্দমায় জড়ানোর সম্ভাবনা বেশি। তাই এখনই রেকর্ড সংশোধন, দলিল হালনাগাদ ও প্রয়োজনীয় দলিলাদি সুরক্ষিত রাখা উচিত।


ভূমি আইনের এই রূপান্তর দেশের সাধারণ মানুষের জন্য সুব্যবস্থা। স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও ডিজিটাল ব্যবস্থাপনায় জমির মালিকানা নিয়ে বিভ্রান্তি ও জালিয়াতি অনেকাংশে কমে আসবে বলে আশা করছে প্রশাসন।

সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=hZxRLAbHJHo

নুসরাত

×