ক্লাব বিশ্বকাপে অভিস্মরণীয় জয়ের পথে গোল করে ফ্ল্যামেঙ্গোর ফুটবলারদের উচ্ছ্বাস
চলমান ক্লাব বিশ্বকাপে একের পর এক চমক দেখাচ্ছে ব্রাজিলিয়ান ক্লাবগুলো। ব্রাজিলের দলগুলোর কাছে যেন পাত্তাই পাচ্ছে না ইউরোপিয়ান জায়ান্টারা। শুরুতে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন প্যারিস সেন্ট জার্মেইকে (পিএসজি) হারিয়েছিল বোতাফোগো। এবার সাবেক ইউরোপ সেরা চেলসিকে হারিয়ে ইতিহাস গড়ল ফ্ল্যামেঙ্গো। এ জয়ে ক্লাব বিশ্বকাপের শেষ ষোলোয়ও উঠেছে ফ্ল্যামেঙ্গো। দিনের আরেক ম্যাচে বোকা জুনিয়র্সকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে নকআউট নিশ্চিত করেছে বায়ার্ন মিউনিখ।
শনিবার ফিলাডেলফিয়ায় ম্যাচের শুরুতে পিছিয়ে পড়েও শেষ পর্যন্ত ৩-১ গোলে জিতেছে ফ্ল্যামেঙ্গো। ফলে ৩৩ বছর পর প্রথমবারের মতো ইউরোপিয়ান কোনো দলের বিপক্ষে পিছিয়ে পড়েও শেষ পর্যন্ত জয় পেল দক্ষিণ আমেরিকার কোনো দল।
ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপে শেষবার এই কীর্তি গড়েছিল সাও পাওলো। ১৯৯২ সালের ডিসেম্বরে বার্সেলোনার বিপক্ষে ফাইনালে শুরুতে পিছিয়ে পড়েও শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলে জিতেছিল সাও পাওলো।
পাশাপাশি ফ্ল্যামেঙ্গোর এই জয়ে ২৫ বছর পর উয়েফার কোনো দলকে নন-ইউরোপিয়ান কোনো দল দুই বা ততোধিক গোলের ব্যবধানে হারানোর স্বাদ পেল। এর আগে সর্বশেষ ২০০০ সালের জানুয়ারিতে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে ৩-১ ব্যবধানে হারিয়েছিল ভাস্কো দা গামা।
এদিন ম্যাচের ১৩ মিনিটে ব্রাজিলিয়ান ক্লাবটির ডিফেন্সিভের ভুল কাজে লাগিয়ে দারুণ ফিনিশিংয়ে চেলসিকে এগিয়ে দেন উইঙ্গার পেদ্রো নেতো। আক্রমণ, প্রতি-আক্রমণের এই ম্যাচে চেলসি লিড ধরে রাখে ম্যাচের ৬১ মিনিট পর্যন্ত। ৬২ মিনিটের মাথায় উইঙ্গার ব্রুনো হেনরিকের গোলে ম্যাচে সমতা ফেরায় ফ্ল্যামেঙ্গো।
এই গোলের রেশ কাটার ৩ মিনিট পর আবারও গোল করে ফ্ল্যামেঙ্গো। কর্নার থেকে বলটি পান হেনরিক, হেডে বল বাড়ান দানিলোকে। কোনো ভুল না করে দারুণ এক ভলিতে জালে বল জড়িয়ে ফ্ল্যামেঙ্গোকে ২-১ গোলে এগিয়ে দেন এই সেন্টারব্যাক।
চেলসির বিপদ আরও বাড়ে ৬৮ মিনিটে নিকোলাস জেকসন লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে। ১০ জনের চেলসি আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি। উল্টো ৮৩ মিনিটে আরও একটি গোল হজম করে বসে। এই গোলটি করেন ফ্ল্যামেঙ্গোর ফরোয়ার্ড ওয়ালাসে ইয়ান। এ জয়ের পর শেষ ষোলো নিশ্চিত করা ফ্ল্যামেঙ্গোর পয়েন্ট ২ ম্যাচে ৬। সমান ম্যাচে চেলসি ও ইএস তিউনিসের পয়েন্ট ৩। গ্রুপের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে চেলসি ও তিউনিস। এই ম্যাচে যারা জিতবে, তারাই শেষ ষোলোয় ফ্ল্যামেঙ্গোর সঙ্গী হবে।
এদিকে ক্লাব বিশ^কাপে ‘সি’ গ্রুপে টানা দ্বিতীয় জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই নকআউট নিশ্চিত করেছে বায়ার্ন মিউনিখ। আর্জেন্টাইন ক্লাব বোকা জুনিয়র্সকে ২-১ গোলে হারিয়েছে জার্মান ক্লাবটি। হার্ড রক স্টেডিয়ামে ম্যাচে ১৮তম মিনিটে হ্যারি কেনের দুর্দান্ত গোলে লিড নেয় বায়ার্ন। তবে ৬৬তম মিনিটে মিগুয়েলের একক প্রচেষ্টার গোলে ম্যাচে ফেরে বোকা জুনিয়র্স।
শেষ পর্যন্ত স্বস্তি নিয়ে মাঠ ছাড়ে বায়ার্ন। ৮৪ মিনিটে জয়সূচক গোলটি করেন ওলিসে। যদি-কিন্তুর হিসাবে বোকা জুনিয়র্সের নকআউটে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। শেষ ম্যাচে অকল্যান্ড সিটিকে তাদের বড় ব্যবধানে হারাতে হবে। অন্যদিকে বায়ার্নের কাছে হারতে হবে বেনফিকাকে।
