ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২২ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২

প্রথম বাংলাদেশী অধিনায়ক হিসেবে দ্বিতীয়বার একই টেস্টের দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি হাঁকালেন শান্ত

রেকর্ডের কথা জানতেন না শান্ত

স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২২:৪২, ২১ জুন ২০২৫

রেকর্ডের কথা জানতেন না শান্ত

গলে বিদায়ী টেস্টে লঙ্কান কিংবদন্তি এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন টাইগার অধিনায়ক

‘আমি জানতাম না, কিন্তু দলে অবদান রাখতে পেরে ভালো লাগছে। দুর্দান্ত কামব্যাক। যেভাবে মুশফিক ভাই আমার সাথে ব্যাটিং করেছে, তা ছিল দুর্দান্ত। আমাদের অতটা আত্মবিশ্বাস ছিল না (জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে), কিন্তু এই সিরিজের পূর্বে আমরা দারুণ প্রস্তুতি নিয়েছি এবং ম্যাচে সেটা দেখিয়েছি’ ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।

গলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে সেঞ্চুরি করেছিলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। ২৭৯ বলে ১৪৮ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। দ্বিতীয় ইনিংসেও সেঞ্চুরি করেছেন এই টাইগার অধিনায়ক। ১৯৯ বলে ১২৫ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। এতেই এক বিরল রেকর্ড গড়েছেন শান্ত। বাংলাদেশের প্রথম ‘অধিনায়ক হিসেবে’ টেস্টে দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরির ইতিহাসে নাম লেখালেন তিনি।
এর আগেও এক টেস্টের দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করেছিলেন শান্ত। প্রথমবার করেছিলেন ২০২৩ সালে মিরপুরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে নাজমুল ছাড়া জোড়া সেঞ্চুরি আছে শুধু মুমিনুল হকের। ২০১৮ সালে চট্টগ্রামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে জোড়া সেঞ্চুরি করেছিলেন মুমিনুল। এছাড়া টেস্টে অধিনায়ক হিসেবে দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করা ১৬তম ক্রিকেটার শান্ত। টেস্ট ইতিহাসে ১৫তম ব্যাটার হিসেবে দুইবার টেস্টের দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করেছেন শান্ত। 
এই তালিকায় এশিয়ার মাত্র ৫ অধিনায়কের দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি আছে। তারা হলেন-ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, সুনিল গাভাস্কার, ইনজামাম উল হক, বিরাট কোহলি এবং মিসবাহ উল হক। এবার এই তালিকায় নাম লেখালেন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক শান্ত।
এদিকে জোড়া সেঞ্চুরির তালিকায় অধিনায়ক হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক রিকি পন্টিং তিনবার করেছেন। সর্বোচ্চ ২৫ বার জোড়া সেঞ্চুরি আছে অস্ট্রেলিয়ার। ১৩ জোড়া সেঞ্চুরি নিয়ে দুইয়ে ইংল্যান্ড। আর সবচেয়ে বেশি (১৬) জোড়া সেঞ্চুরি হয়েছে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৫ বার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। সবচেয়ে বেশি জোড়া সেঞ্চুরি দেখেছে অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেড ওভাল। এই সংখ্যাটা ৮। জোড়া সেঞ্চুরি করে দুই ইনিংসেই অপরাজিত থাকা একমাত্র ব্যাটসম্যান শ্রীলঙ্কার অরবিন্দ ডি সিলভা। দুই ইনিংসেই ১৫০ ছাড়িয়েছেন শুধু অস্ট্রেলিয়ার অ্যালান বোর্ডার।

ছয়বার একই টেস্টে দুজন ব্যাটসম্যান জোড়া সেঞ্চুরি পেয়েছেন। সর্বশেষ ২০২৪ সালে সিলেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস। টেস্ট অভিষেকে জোড়া সেঞ্চুরি আছে দুজনের ওয়েস্ট ইন্ডিজের লরেন্স রো ও পাকিস্তানের ইয়াসির হামিদ। ইংল্যান্ডের গ্রাহাম গুচ ও শ্রীলঙ্কার কুমার সাঙ্গাকারা একই ম্যাচে ট্রিপল সেঞ্চুরি ও সেঞ্চুরি পেয়েছেন। গুচ ১৯৯০ সালে ভারতের বিপক্ষে ও সাঙ্গাকারা ২০১৪ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে এই কীর্তি গড়েছেন। আর এক ম্যাচে সেঞ্চুরি ও ডবল সেঞ্চুরি পেয়েছেন ছয়জন ক্রিকেটার।
এদিকে এই টেস্টেই উইকেটরক্ষক ব্যাটার হিসেবে বিশ^ রেকর্ড গড়েছেন মুশফিকুর রহিম। দীর্ঘ দুই দশকের ক্যারিয়ারে একটি বলও (বোলিং) না করা ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৫৬১৩ রান এখন মুশফিকের। টাইগার লিটল মাস্টার ভেঙে দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান গ্রেট অ্যাডাম গিলক্রিস্টের ১৫৪৬১ রানের রেকর্ড। মুশফিকের এই রেকর্ডের তৃতীয় স্থানে দক্ষিণ আফ্রিকার কুইন্টন ডি কক (১২,৬৫৪ রান), এরপরই আছেন দুই ইংলিশ উইকেটকিপার ব্যাটার যথাক্রমে জস বাটলার (১১,৮৮১ রান) ও জনি বেয়ারস্টো (১১,৫৮১ রান)।
এছাড়া প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে টেস্টে ডবল (১১ মার্চ ২০১৩, এই গলে ২০০ রান) সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। নিজেদের ২০ বছরের টেস্ট ইতিহাসে আভিজাত্যের আঙিনায় পাঁচ ডবল সেঞ্চুরির তিনটিই তার নামের পাশে। সেই গলেই সংখ্যাটা চার হতে পারত। গত বুধবার দ্বিতীয় দিনের শেষবেলায় ১৬৩ রান করে আউট হয়েছেন তিনি। দুই দিনব্যাপী ৩৫০ বলের ইনিংসটি তিনি সাজিয়েছেন ৯টি চার দিয়ে।
এই টেস্টে ফাইফারের দেখা পেয়েছেন অফ-স্পিনাল নাঈম হাসান। চট্টগ্রামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২০১৮ সালের নভেম্বরে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল তার। ইতোমধ্যে সাদা পোশাকে ৬ বছর পার করে দিয়েছেন এই অফ স্পিনার।

×