
ছবি: জনকণ্ঠ
শিশুদের সংক্রামক রোগ থেকে রক্ষা করতে সময়মতো টিকাদানের আহ্বান জানিয়েছেন দেশের স্বনামধন্য শিশু রোগ বিশেষজ্ঞরা।
শনিবার (২১ জুন) রাতে হলিডে ইন ঢাকার ইলিশ হলরুমে “Expanding Protection Against Childhood Infectious Diseases Through Vaccination” শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। শিশুদের সংক্রামক রোগ থেকে রক্ষা করতে সময়মতো টিকাদানের গুরুত্ব তুলে ধরতে দেশের স্বনামধন্য শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন।
সাইনোভিয়া ফার্মা পিএলসি-এর আয়োজনে এই অনুষ্ঠানে টিকাদান নিয়ে আলোচনা করেন দেশের শীর্ষ শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা জানান, বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে, আর এই প্রেক্ষাপটে শিশুদের রোগ প্রতিরোধে কার্যকর ও সময়োপযোগী টিকাদান অত্যন্ত জরুরি।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রফেসর ড. আনা লিসা টি. ওং-লিম, যিনি ফিলিপাইনের ইউনিভার্সিটি অফ দ্য ফিলিপাইনস ম্যানিলা ফিলিপাইন জেনারেল হাসপাতালের শিশু সংক্রামক ও ট্রপিকাল ডিজিজ বিভাগের প্রধান। তিনি তাঁর গবেষণাভিত্তিক অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, শিশুদের মারাত্মক রোগ থেকে বাঁচাতে টিকাদান কার্যক্রমকে আরও বিস্তৃত করতে হবে।
প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন দেশের বিশিষ্ট শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ড. এম ইশতিয়াক হোসেন, প্রফেসর ড. এ আর এম লুতফুল কবির, এবং প্রফেসর ড. মো. আবিদ হোসেন মোল্লাহ। তাঁরা শিশুদের নিউমোনিয়া, মেনিনজাইটিস, টাইফয়েড, হেপাটাইটিস-এ এবং মৌসুমী ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো রোগ প্রতিরোধে টিকাদানের ভূমিকা ও প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের শিশু স্বাস্থ্যব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করার জন্য বেশ কিছু কার্যকর উদ্যোগের পরামর্শ দেন।
আলোচনায় উঠে আসে ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ শিশু টিকা—Hexaxim, Tetraxim (বুস্টার), Menactra (মেনিনজাইটিস), Typhim VI (টাইফয়েড), Avaxim (হেপাটাইটিস A) এবং Vaxigrip Tetra (ইনফ্লুয়েঞ্জা)—যেগুলো বিশ্বখ্যাত ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান Sanofi Pasteur কর্তৃক তৈরি। বিশেষজ্ঞরা জানান, যদিও সরকারের ইপিআই (Expanded Programme on Immunization) এর আওতায় কিছু টিকা দেওয়া হয়, তবুও অনেক বুস্টার ডোজ ও উন্নত টিকা শুধুমাত্র বেসরকারিভাবে পাওয়া যায়। এই গ্যাপ পূরণ করা এখন সময়ের দাবি।
সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত ৮০ জনের বেশি শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ। তাঁরা শিশুদের সংক্রামক রোগ এবং নতুন টিকা নিয়ে সমসাময়িক জ্ঞান অর্জনের সুযোগ পেয়েছেন।
অনুষ্ঠানে সাইনোভিয়া ফার্মা পিএলসি’র পক্ষ থেকে সায়েদ এ বি তাহমিদ (পরিচালক - মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস) সকল শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, মূল বক্তা, বিশেষ আলোচক ও অংশগ্রহণকারীদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই আয়োজনে যে মূল্যবান অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান বিনিময় হয়েছে, তা বাংলাদেশে শিশু টিকাদানের পরিসর বাড়াতে এবং প্রতিরোধযোগ্য রোগ থেকে শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ভবিষ্যৎ কার্যক্রমে অনুপ্রেরণা জোগাবে। তিনি আরও জানান, সাইনোভিয়া ফার্মা পিএলসি বাংলাদেশের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে দেশব্যাপী শিশু টিকাদান কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছে।
উল্লেখ্য যে এই সম্মেলনের সফল আয়োজন দেশের শিশুরোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে বিবেচিত হয়। পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আরেকটি সম্মেলন গতকাল ২০ জুন (শুক্রবার) রাতে দ্য পেনিনসুলা চট্টগ্রামের ডালিয়া হলরুমে অনুষ্ঠিত হয়।
কাওসার/শহীদ