
ছবি: প্রতীকী
জন্ম নিবন্ধনের সনদে ভুল জন্মতারিখ এখন আর বড় কোনো প্রতিবন্ধকতা নয়। সরকারের নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী অনলাইন কিংবা সরাসরি দপ্তরে গিয়েই সহজে সংশোধন করা যাচ্ছে বয়স বা জন্মতারিখ। শিশু থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্ক—সবার ক্ষেত্রেই নির্দিষ্ট কাগজপত্র জমা দিয়ে সংশোধনের কাজ এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি সাশ্রয়ী ও কার্যকর।
শিশুর জন্মতারিখ ভুল হলে কী করবেন?
অনেক সময় টিকা কার্ডের তথ্যের ভিত্তিতে শিশুর জন্ম নিবন্ধন করা হয়, যা পরবর্তীতে ভুল প্রমাণিত হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে অভিভাবকদের দুশ্চিন্তার কিছু নেই। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা কিংবা সিটি করপোরেশন কার্যালয়ে আবেদন করে অনায়াসে এ ভুল সংশোধন করা সম্ভব।
সংশোধনের জন্য যা করতে হবে:
১. অনলাইনে আবেদন:
প্রথমে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে (https://bdris.gov.bd) গিয়ে সংশোধনের আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে। আবেদনপত্রে সংশোধনের কারণ, সঠিক জন্মতারিখ এবং প্রমাণ হিসেবে টিকা কার্ড বা প্রাসঙ্গিক কাগজপত্র স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে।
২. অফলাইনেও সুযোগ:
অনেকেই সরাসরি সংশ্লিষ্ট অফিসে গিয়ে হাতে-কলমে ফর্ম পূরণ করে জমা দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। এক্ষেত্রেও টিকা কার্ড সংযুক্ত করলে দ্রুত সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়।
প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ভিন্ন পদ্ধতি
প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধনে সাল বা তারিখ নিয়ে ভুলের অভিযোগ বেশি পাওয়া যায়। যেমন, ১৯৮৭-এর পরিবর্তে ১৯৭৮ বা ২০০১-এর স্থলে ১৯৯৭ লেখা হয়েছে—এমন ঘটনাও বিরল নয়। এসব ভুল সংশোধনের জন্য প্রমাণস্বরূপ নির্ভরযোগ্য নথিপত্র জমা দিতে হয়।
যে কাগজপত্র লাগবে:
শিক্ষাগত সনদ:
এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার সনদে যদি সঠিক জন্মতারিখ থাকে, তবে তা প্রধান প্রমাণ হিসেবে গ্রহণযোগ্য। এছাড়া JSC, HSC বা অন্যান্য বোর্ড সনদও লাগতে পারে।
জাতীয় পরিচয়পত্র (NID):
এনআইডিতে সঠিক জন্মতারিখ থাকলে তা কার্যকর প্রমাণপত্র হিসেবে গ্রহণ করা হয়।
অন্যান্য কাগজপত্র:
সরকারি বা বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত জন্ম সনদ, হাসপাতালের ছাড়পত্র, পিতা-মাতার এনআইডি, এমনকি পুরোনো জন্ম নিবন্ধনের কপি থাকলেও কাজে লাগে।
জন্মতারিখ সংশোধনে যে নথিপত্র প্রয়োজন:
- ইপিআই কার্ড (টিকা কার্ড)
- এসএসসি/এইচএসসি বা অন্যান্য সনদ
- জাতীয় পরিচয়পত্র (NID)
- পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয়পত্র
- চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের জন্ম সনদ/ছাড়পত্র
- পুরোনো নিবন্ধনের কপি বা সংশ্লিষ্ট ফাইল
কেন সংশোধন জরুরি?
জন্ম নিবন্ধনে সঠিক জন্মতারিখ না থাকলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি, সরকারি চাকরি, ব্যাংক হিসাব খোলা, পাসপোর্ট তৈরি কিংবা বিদেশ ভ্রমণের সময় জটিলতা তৈরি হতে পারে। তাই জন্ম তারিখে সামান্য ভুল থাকলেও তা সংশোধন করে নেওয়া উচিত।
সব প্রমাণপত্র অবশ্যই সত্যায়িত করে সংযুক্ত করতে হবে এবং আবেদনপত্রে দিতে হবে নির্ভুল ও পরিপূর্ণ তথ্য। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দিকনির্দেশনা অনুসরণ করে নির্ধারিত ফি প্রদান করলে সাধারণত দ্রুততম সময়ে সনদ সংশোধনের কাজ সম্পন্ন হয়।
রাকিব