ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২২ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২

ত্রিশালে প্রতিবাদের মুখে গ্রেপ্তার ‘মাদক সম্রাজ্ঞী’ মিনা, মুক্তাসহ সহযোগীরা এখনও পলাতক

আবু রাইহান, ত্রিশাল, ময়মনসিংহ

প্রকাশিত: ২৩:০৯, ২১ জুন ২০২৫; আপডেট: ২৩:০৯, ২১ জুন ২০২৫

ত্রিশালে প্রতিবাদের মুখে গ্রেপ্তার ‘মাদক সম্রাজ্ঞী’ মিনা, মুক্তাসহ সহযোগীরা এখনও পলাতক

ছবি: সংগৃহীত

ত্রিশাল পৌরসভার আলোচিত নারী মাদক কারবারি তাহমিনা বেগম মিনা এক কেজি গাঁজাসহ পুলিশের হাতে অবশেষে ধরা পড়েছেন। তবে তার ভাই ও অন্যতম সহযোগী মুক্তাসহ মাদক চক্রের অন্যান্য সদস্যরা এখনও পলাতক রয়েছেন।

শনিবার (২১ জুন) ত্রিশাল থানা পুলিশ পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মৃধাবাড়ী মোড় সংলগ্ন এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। তাহমিনা বেগম মিনা ওই এলাকার বাসিন্দা মাহমুদুল আলম ফারুক ড্রাইভারের স্ত্রী। দুপুর ২টায় থানায় আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনসুর আহাম্মদ এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মিনা ও তার চক্র দীর্ঘদিন ধরে পৌরসভার ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডজুড়ে প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। এখান থেকেই উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশপাশে ছড়িয়ে পড়ত মাদকদ্রব্য। এলাকাবাসীর অভিযোগ, তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকা সত্ত্বেও অজ্ঞাত কারণে এতদিন ধরে সে আইনের বাইরে ছিল।

এই পরিস্থিতির প্রতিবাদে গত মঙ্গলবার (১৭ জুন) এলাকাবাসী রাস্তায় নেমে আসে। কয়েকশত নারী-পুরুষ মিনা, মুক্তা ও অন্যান্য মাদক কারবারিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে কেরানীবাড়ী মোড়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি পালন করে। “চলো যাই যুদ্ধে, মাদকের বিরুদ্ধে”—এমন স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।

এই ব্যাপক জনচাপ ও আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ দ্রুত অভিযান চালিয়ে শনিবার সকালে মিনাকে গ্রেপ্তার করে। ওসি মনসুর আহাম্মদ জানান, তার বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

তিনি আরও জানান, গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে অপর একটি অভিযানে ১২৩ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, মাদক বিক্রির নগদ ৫০ হাজার ৫৬০ টাকা এবং ব্যবহৃত পাঁচটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। এ অভিযান চলমান থাকবে বলেও জানান তিনি।

ওসি মনসুর আহাম্মদ বলেন, “ত্রিশালে মাদক ব্যবসার কোনো স্থান নেই। এক কেজি গাঁজাসহ মিনা গ্রেপ্তার হয়েছে, মুক্তাসহ অন্য পলাতকদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মাদকের বিরুদ্ধে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি।”

এদিকে এলাকাবাসী দাবি জানিয়েছেন, শুধুমাত্র মিনাকে গ্রেপ্তার করেই দায়িত্ব শেষ করা যাবে না। পুরো চক্রকে আইনের আওতায় আনতে হবে। তারা পুলিশের ভূমিকাকে স্বাগত জানিয়ে দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন।

জনগণের দাবি এবং পুলিশের সক্রিয় ভূমিকার ফলে ত্রিশালজুড়ে মাদকবিরোধী অভিযানে নতুন গতি এসেছে বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা।

আসিফ

×