
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের পারিবারিক আইনে শুধু স্বামী নয়, স্ত্রীর পক্ষ থেকেও আইনি প্রক্রিয়ায় তালাক দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে দুজনের সম্মতিতে যদি সংসার চালানো সম্ভব না হয়, তাহলে ‘খোলা তালাক’ বা ‘মোবারক তালাক’-এর মাধ্যমে বৈধভাবে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটানো যায়। এসব তালাকের ক্ষেত্রে দেনমোহর, খোরপোষ বা ক্ষতিপূরণ সম্পর্কেও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে, যা প্রত্যেক নারী-পুরুষের জানা উচিত।
খোলা তালাক কী?
খোলা তালাক হলো স্ত্রীর অনুরোধে স্বামীর সম্মতিতে প্রদত্ত তালাক। যখন স্বামীর সঙ্গে সংসার করা একেবারে অসম্ভব হয়ে পড়ে, তখন অনেক নারী খোলা তালাকের পথে হাঁটেন। এই প্রক্রিয়ায় স্ত্রী নিজের দেনমোহর এবং ভবিষ্যৎ খোরপোষ ত্যাগ করে স্বামীর কাছ থেকে তালাক গ্রহণ করেন। তবে যদি স্ত্রীর গর্ভে সন্তান থাকে, তাহলে সে সন্তানের জন্য ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকার স্ত্রী বজায় রাখবেন। খোলা তালাকের ক্ষেত্রে স্ত্রীকে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত নোটিশ পাঠাতে হয় এবং স্বামীর লিখিত সম্মতি প্রয়োজন হয়।
মোবারক তালাক কী?
মোবারক তালাক হলো স্বামী ও স্ত্রীর পারস্পরিক সম্মতিতে বিবাহবিচ্ছেদ। এ ক্ষেত্রে দুজনই বুঝতে পারেন যে একসঙ্গে বসবাস করা সম্ভব নয়, তাই সম্মিলিতভাবে সম্পর্কের ইতি টানেন। এই প্রক্রিয়ায় কোনো পক্ষই কারও কাছে দেনমোহর, খোরপোষ বা ক্ষতিপূরণের দাবি করতে পারেন না। এটি সাধারণত শান্তিপূর্ণভাবে আলাদা হওয়ার একটি উপায়।
আইনি দৃষ্টিকোণ
খুলা তালাক সম্পর্কে ‘শিরিন আলম চৌধুরী বনাম ক্যাপ্টেন শামসুল আলম চৌধুরী’ মামলায় (৪৮ ডিএলআর, পৃষ্ঠা ৭৯) আদালত উল্লেখ করেন যে স্ত্রীর পক্ষ থেকে দেনমোহর ত্যাগ করে তালাক নেওয়াই খোলা তালাকের মূল বিষয়। আর মোবারক তালাকের ক্ষেত্রে ‘১৬ ডিএলআর, পৃষ্ঠা ৩৮৯’-এ বলা হয়েছে, পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে বিবাহবিচ্ছেদ হলে আর্থিক দায়ভার বা পাওনার বিষয় থাকে না।
আবির