
ছবিঃ সংগৃহীত
বাংলাদেশে জমি দখল এখন আর কেবল দেওয়ানি আদালতের দীর্ঘসূত্রতা নির্ভর একটি বিষয় নয়। ২০২৩ সালের “ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন” কার্যকর হওয়ার পর পরিস্থিতি পাল্টেছে। জমির প্রকৃত মালিক এখন দ্রুত ও কার্যকর প্রতিকার পেতে পারেন, তাও সরাসরি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন করেই।
জোরপূর্বক দখল বা উচ্ছেদের শিকার হলে কী করবেন?
আইনের ৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী, যদি কেউ বৈধ মালিকানাধীন জমি থেকে আপনাকে উচ্ছেদের চেষ্টা করে কিংবা দখল করে নেয়, তাহলে আপনি সরাসরি সংশ্লিষ্ট নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে লিখিত আবেদন করতে পারবেন।
আবেদন করার নিয়ম:
নির্ধারিত ফরমে (ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার বিধিমালা, ২০২৪ অনুযায়ী) আবেদন করতে হবে।
আবেদনের সঙ্গে জমির মালিকানা সম্পর্কিত দলিল, খতিয়ান, নামজারি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করতে হবে।
আবেদন নিজে অথবা আইনজীবীর মাধ্যমে দাখিল করা যাবে।
কী করবেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট?
- অপর পক্ষকে কারণ দর্শানোর জন্য নোটিশ প্রদান করবেন।
- প্রয়োজন হলে সরেজমিন তদন্ত বা সংশ্লিষ্ট সার্ভেয়ারের মাধ্যমে যাচাই করবেন।
- যাচাই শেষে যথাযথ আদেশ প্রদান করবেন।
- জরুরি হলে কী ব্যবস্থা নেবেন ম্যাজিস্ট্রেট?
- মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে দখলদার উচ্ছেদ করে প্রকৃত মালিককে জমির দখল ফিরিয়ে দিতে পারবেন।
- আদেশ অমান্য করলে ওয়ারেন্ট ইস্যু করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
- ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যেন না ঘটে, সে জন্য বন্ড নেওয়ারও ব্যবস্থা রয়েছে।
কতদিনে নিষ্পত্তি?
এই ধরনের অভিযোগ ৪৫ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির কথা বলা হয়েছে আইনে।
তবে, যদি জমি উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত হয় এবং এখনো বণ্টন না হয়, বা দেওয়ানী আদালতে মামলা চলমান থাকে, তাহলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে আপনি দেওয়ানী আদালতে বিচারকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে মোবাইল কোর্টের আবেদন করতে পারেন।
এই আইন কেন গুরুত্বপূর্ণ?
এতদিন জমির দখল সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তিতে মানুষকে বছর বছর আদালতের দ্বারে ঘুরতে হতো। এখন এই নতুন আইন বাস্তবায়নের ফলে, সাধারণ মানুষ দ্রুত ন্যায্যতা পাচ্ছে এবং ভূমি দস্যুদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে।
বিশেষ পরামর্শ:
জমি সংক্রান্ত সকল দলিল-দস্তাবেজ প্রস্তুত রাখুন। সমস্যার শুরুতেই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বা আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
আলীম